যোগী সরকারের প্রশংসা করে সমাজবাদী পার্টির সমালোচনায় মায়াবতী

লখনউ, ৮ অক্টোবর: উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে বড় চমক দিলেন বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)-র সুপ্রিমো মায়াবতী। মঙ্গলবার লখনউয়ে দলের প্রতিষ্ঠাতা কাংশীরাম-এর ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল…

Who Holds the 'Sweet Shemai' of Muslim Votes in Uttar Pradesh

লখনউ, ৮ অক্টোবর: উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে বড় চমক দিলেন বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)-র সুপ্রিমো মায়াবতী। মঙ্গলবার লখনউয়ে দলের প্রতিষ্ঠাতা কাংশীরাম-এর ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বিরলভাবে বর্তমান যোগী আদিত্যনাথ সরকারের প্রশংসা করেন। তবে একই সঙ্গে তীব্র আক্রমণ করেন সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-কে।

Advertisements

প্রায় ৫,০০০ বাসে করে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে সমর্থকরা এই সমাবেশে এসেছিলেন। অনুষ্ঠানটিকে বিএসপি-র শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ হিসেবেই দেখা হচ্ছে, বিশেষ করে ২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে।

বিজ্ঞাপন

যোগী সরকারের কাজের প্রশংসা

মায়াবতী বলেন, “যোগী সরকার জনতার অর্থ ব্যবহারে সতর্ক এবং স্বচ্ছ। কাংশীরাম মেমোরিয়ালের টিকিট বিক্রি থেকে যে আয় হচ্ছে, তা রক্ষণাবেক্ষণে খরচ করা হচ্ছে। আগে এসপি সরকারের আমলে এই ধরনের দায়িত্বশীলতা দেখা যায়নি।”
তিনি আরও দাবি করেন, এসপি শাসনামলে জনতার অর্থ ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করা হত এবং দলিত নেতা কাংশীরামের স্মৃতিস্তম্ভের যথাযথ যত্ন নেওয়া হয়নি।

এসপিকে সরাসরি নিশানা

সমাজবাদী পার্টির “দ্বিমুখী রাজনীতি” নিয়েও মায়াবতীর কড়া সমালোচনা। তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকলে এসপি দলিত আইকনদের প্রতি উদাসীন থাকে, আর বিরোধী হলে তাঁদের নামে রাজনীতি করে। এই মন্তব্যকে রাজনৈতিক মহল দেখছে এসপি-র “পিডিএ” (পিছড়া, দলিত, আলপ সংখ্যালঘু) ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতির উপর সরাসরি আঘাত হিসেবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

বিশেষজ্ঞদের মতে, মায়াবতীর এই পদক্ষেপ কৌশলগত। তিনি সরাসরি বিজেপির সঙ্গে জোটের ইঙ্গিত দেননি। তবে যোগী সরকারের কাজের প্রশংসা করে এসপি-র দুর্বলতা সামনে আনাই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য।
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, মায়াবতীর এই মন্তব্য হয়তো ভবিষ্যতের সম্ভাব্য রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এটি বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার ইঙ্গিত। আবার অনেকের মতে, এটি কেবল এসপি-র ভোটব্যাঙ্কে আঘাত হানার কৌশল।

সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া

সোশ্যাল মিডিয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, এটি “রাজনৈতিক চাল”, যেখানে মায়াবতী দলিত ভোটারদের পুনরায় আকর্ষণ করতে চাইছেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এটি তাঁর দলের নিরপেক্ষ অবস্থান প্রদর্শনের প্রয়াস।

উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে যোগী সরকারের প্রশংসা করে এসপি-র সমালোচনা করা মায়াবতীর এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে। আগামী দিনে এই অবস্থান কেবল দলীয় পুনর্জাগরণের পথ প্রশস্ত করবে নাকি বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব কমাবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে একথা নিশ্চিত, এই সমাবেশের পর উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক মঞ্চে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন মায়াবতী।