মিজোরামে ৭.১৯ কোটি টাকার মাদকদ্রব্য আটক আসাম রাইফেলসের

আসাম রাইফেলস মিজোরামে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মিলিতভাবে পরিচালিত একাধিক অভিযান চালিয়ে ২ কেজিরও বেশি মেথামফেটামিন (Methamphetamine- Massive Drug Seizure) উদ্ধার করেছে, যার বাজারমূল্য প্রায়…

Assam Rifles

আসাম রাইফেলস মিজোরামে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মিলিতভাবে পরিচালিত একাধিক অভিযান চালিয়ে ২ কেজিরও বেশি মেথামফেটামিন (Methamphetamine- Massive Drug Seizure) উদ্ধার করেছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৭.১৯ কোটি টাকা। সোমবার এ তথ্য জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

অভিযান এবং মাদকদ্রব্যের আটক
আসাম রাইফেলসের সদর দপ্তর (HQ IGAR East) থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “১১ নভেম্বর সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসাম রাইফেলস এবং জোখাওথর পুলিশ বিভাগ একটি সাদা গাড়ি আটক করে। গাড়িটিকে চাম্ফাই জেলার জোখাওথর-মেলবুক সড়কের দিকে যাচ্ছিল এবং সীমান্তপারের পাচারের সন্দেহে সেটিকে থামানো হয়।

   

অভিযানের সময় গাড়ির যাত্রীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং একটি নীল ব্যাগ ফেলে রেখে যায়। ব্যাগটি তল্লাশি করার পর দেখা যায়, তাতে ২.৩৯৯ কেজি মেথামফেটামিন রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৭.১৯৭ কোটি টাকা। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য, গাড়িটি এবং অন্যান্য জব্দকৃত সামগ্রী জোখাওথর পুলিশ বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে, যাতে পরবর্তী তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করা যায়।”

পৃথক অভিযানে বিদেশি ই-সিগারেট উদ্ধার
একই সময়ে, ১০ নভেম্বর আসাম রাইফেলস ও ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন, জোখাওথর মিলে আরেকটি অভিযান চালায়। চাম্ফাই জেলার জোখাওথর এলাকায় পরিচালিত এই অভিযানে ৩৩৯ টি বিদেশি ই-সিগারেট আটক করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ৮.৫৯ লক্ষ টাকা। অনুমান করা হচ্ছে যে এই ই-সিগারেটগুলো অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করানো হয়েছে। এগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং পরে জব্দ করা হয়। উদ্ধারকৃত ই-সিগারেট ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন, জোখাওথরে হস্তান্তর করা হয়, যাতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

সীমান্ত সুরক্ষা ও মাদক পাচার প্রতিরোধে আসাম রাইফেলসের প্রতিশ্রুতি
মিজোরাম রাজ্যের বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সেখানে মাদক পাচার ও অবৈধ পণ্যের প্রবাহের সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আসাম রাইফেলস মিজোরামের এই ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রতিনিয়ত সতর্ক এবং প্রস্তুত রয়েছে। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মিলিতভাবে সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আসাম রাইফেলস তার কৌশলসমূহকে নতুনভাবে সাজিয়েছে এবং তা সফলভাবে বাস্তবায়িত করছে।

আসাম রাইফেলসের একটি বিবৃতিতে জানানো হয়, “মিজোরাম সীমান্তে ক্রমবর্ধমান অবৈধ মাদক প্রবাহের সমস্যা মোকাবিলায় আমরা সর্বদা সতর্ক রয়েছি। প্রতিটি অভিযান আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এইসব সফল অভিযানে আমরা মাদক পাচার রোধে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।”

মিজোরামে মাদক পাচার পরিস্থিতি এবং প্রশাসনের ভূমিকা
মিজোরাম রাজ্যের চাম্ফাই জেলা এবং অন্যান্য সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ মাদক পাচারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। মিজোরামের ভৌগোলিক অবস্থান মাদক পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আসাম রাইফেলস, বিএসএফ, পুলিশ এবং অন্যান্য স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ উদ্যোগে এই এলাকায় ব্যাপক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

মাদক পাচার রোধে জনগণের সহযোগিতার আহ্বান
মিজোরামের মানুষ ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে আসাম রাইফেলস এবং অন্যান্য বাহিনী যৌথভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের সহায়তা এবং সচেতনতার মাধ্যমে মাদক পাচারের বিরুদ্ধে আরো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

মাদক পাচার রোধে সীমান্তে নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার
সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আসাম রাইফেলস এবং অন্যান্য বাহিনী স্থল ও নৌপথে নিয়মিত টহল দিচ্ছে। টহল দেওয়ার পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় নজরদারি প্রযুক্তি এবং পর্যবেক্ষণ ক্যামেরা স্থাপন করে সীমান্ত সুরক্ষা আরো জোরদার করা হয়েছে। এ ধরনের কঠোর অভিযান মিজোরামের সীমান্তবর্তী এলাকায় মাদক পাচার প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।