সশস্ত্র লড়াইয়ে বিরতি, এক মাসের জন্য যুদ্ধবিরতির ডাক দিল মাওবাদীরা

ভারতের বাম চরমপন্থী আন্দোলনের ইতিহাসে এটি এক বড় ঘটনা। প্রথমবারের মতো সশস্ত্র লড়াইয়ের পথ থেকে সরে এসে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিল ভারতের মাওবাদী (Maoists) সংগঠন।…

Maoists Propose One-Month Ceasefire, Seek Centre’s Nod for Peace Talks

ভারতের বাম চরমপন্থী আন্দোলনের ইতিহাসে এটি এক বড় ঘটনা। প্রথমবারের মতো সশস্ত্র লড়াইয়ের পথ থেকে সরে এসে শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিল ভারতের মাওবাদী (Maoists) সংগঠন। নিজেদের ঘাঁটি আবুজমাড় হারানো ও শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে চরম চাপে পড়েছে মাওবাদী সংগঠনটি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দিল তারা, যা বিশেষজ্ঞদের মতে দেশের নকশালবাদের ইতিহাসে এক “টার্নিং পয়েন্ট”।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তারা সাময়িকভাবে সশস্ত্র অভিযান বন্ধ রাখতে ইচ্ছুক এবং এক মাসের জন্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। মূলত শান্তি আলোচনার পথ খুলতে ও অভ্যন্তরীণ পরামর্শের সময়সীমা পেতে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিবৃতিটি স্বাক্ষর করেছেন সংগঠনের মুখপাত্র কমরেড অভয়। মাওবাদীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আমরা চাই সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে জানাক যে তারা আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক কি না। এই সময়ের মধ্যে আমরা নিজেদের সংগঠন ও নেতৃত্বের সঙ্গে পরামর্শ করব। এরপর আলোচনার রূপরেখা ঠিক করা সম্ভব হবে।” এই বিবৃতি শান্তি আলোচনায় সংগঠনের সদিচ্ছার প্রতিফলন।

   

তবে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বিবৃতিটি প্রকাশ্যে আসার সময়েই প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির সময়সীমা শেষ হয়ে যায়। ফলে এই সুযোগ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, সরকার যদি সময়মতো ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাত, তবে হয়তো এই সুযোগে স্থায়ী শান্তির পথ তৈরি হতো।

Advertisements

অন্যদিকে, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, মাওবাদীদের এই প্রস্তাব কৌশলগতও হতে পারে। চাপের মুখে তারা সময় কিনতে চাইছে। তবে, যদি সত্যিই তারা অস্ত্র নামাতে রাজি হয়, তবে সরকারের উচিত শান্তি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজা। কারণ সশস্ত্র দমনপীড়ন দিয়ে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান আসে না, বরং মূল সমস্যার মূলে পৌঁছনো জরুরি।