তেলেঙ্গানা, ১৩ সেপ্টেম্বর: ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) বা সিপিআই (মাওবাদী)-র কেন্দ্রীয় (Maoist Leader) কমিটির সদস্যা (সিসিএম) পোথুলা পদ্মাবতী তেলেঙ্গালা পুলিশের কাছের আত্মসমর্পণ করেছে। পথুলা কল্পনা, মায়নাক্কা ও সুজাতা নামেও পরিচিত ছিল। এই ঘটনা রাজ্যের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
পদ্মাবতী দীর্ঘদিন ধরে মাওবাদী সংগঠনের একজন প্রভাবশালী নেত্রী ছিলেন। তিনি সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তার এই আত্মসমর্পণ মাওবাদী আন্দোলনের উপর একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং তেলেঙ্গানা সরকার ও পুলিশের নিরলস প্রচেষ্টার ফল বলে মনে করা হচ্ছে।
পোথুলা পদ্মাবতী দীর্ঘদিন ধরে মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং তিনি বিভিন্ন ছদ্মনামে কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে সংগঠনের নীতি-নির্ধারণ, কৌশলগত পরিকল্পনা এবং সশস্ত্র কার্যকলাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তেলেঙ্গানা ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিতে মাওবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে তার নাম জড়িত ছিল।
তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রুজু ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মাবতী সিপিআই (মাওবাদী)-র অভ্যন্তরীণ কাঠামো এবং কার্যক্রম সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করতে পারেন, যা নিরাপত্তা বাহিনীকে মাওবাদী নেটওয়ার্ক ভাঙতে সাহায্য করবে।
তেলেঙ্গানা পুলিশের একটি সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পদ্মাবতীর আত্মসমর্পণের পিছনে রাজ্য সরকারের পুনর্বাসন নীতি এবং পুলিশের ক্রমাগত চাপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সরকারের পুনর্বাসন কর্মসূচির মাধ্যমে মাওবাদী নেতা ও কর্মীদের মূলধারায় ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
এই কর্মসূচির অধীনে আত্মসমর্পণকারীদের জন্য শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়। পদ্মাবতীও এই নীতির সুবিধা নিয়ে সাধারণ জীবনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে, পদ্মাবতী সশস্ত্র আন্দোলনের প্রতি হতাশা এবং সংগঠনের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মাওবাদী সংগঠনের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব, সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং সরকারি বাহিনীর ক্রমাগত অভিযানের ফলে অনেক নেতা ও কর্মী মূলধারায় ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। পদ্মাবতীর এই পদক্ষেপ অন্যান্য মাওবাদী সদস্যদের জন্যও একটি উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে।
কারফিউ শিথিল, খুলছে বাজার, সুশীলার শপথে নতুন সকাল নেপালে
তেলেঙ্গানা সরকার এবং পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে মাওবাদী কার্যকলাপ দমনের জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করে আসছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান, পুনর্বাসন কর্মসূচি এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে রাজ্যে মাওবাদী প্রভাব কমিয়ে আনা হয়েছে। পদ্মাবতীর আত্মসমর্পণ এই প্রচেষ্টার একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে, পুলিশ এখনও সতর্ক রয়েছে এবং মাওবাদী কার্যকলাপের উপর নজর রাখছে।