ওড়িশা-ছত্তীসগঢ় সীমানায় সোমবার রাতে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের (Maoists Encounter) এক ভয়াবহ গুলির লড়াইয়ে ১৪ মাওবাদী নিহত হয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে এক মাওবাদীর(Maoists Encounter) মাথার দাম ছিল ১ কোটি টাকা। গত কয়েকদিন ধরে সিআরপিএফ এবং পুলিশের যৌথ বাহিনী একটি আন্তঃরাজ্য অভিযান চালিয়ে আসছে, যার অংশ হিসেবে এ অভিযানটি পরিচালিত হয়।
পুলিশের দাবি, গত ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া আন্তঃরাজ্য অভিযানটি এখন পর্যন্ত চলমান। সিআরপিএফ এবং পুলিশ যৌথভাবে একে অপরকে সমর্থন করে এই অভিযান চালাচ্ছে। সোমবার রাতে, নিরাপত্তাবাহিনী খবর পায় যে, ওড়িশার নওপাড়া এবং ছত্তীসগঢ়ের গরিয়াবন্দের সীমানায় মাওবাদীরা জড়ো হয়ে রয়েছে। এই খবর পাওয়ার পর সিআরপিএফ এবং পুলিশের যৌথ বাহিনী অভিযানে যায়।
যখন বাহিনী সেখানে পৌঁছায়, তখন মাওবাদীরা বাহিনীর দিকে গুলি চালাতে শুরু করে। নিরাপত্তাবাহিনীও পাল্টা জবাব দেয় এবং রাতভর দু’পক্ষের মধ্যে গুলির লড়াই চলে। পুলিশ জানায়, এই সংঘর্ষে ১২ মাওবাদী নিহত হয়েছেন। তবে, মোট কতজন মাওবাদী সংঘর্ষে অংশ নিয়েছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। অভিযানের পরে, ওই সীমানা এলাকায় জঙ্গলে মাওবাদীদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
গোপন সূত্রে যৌথ বাহিনী (Maoists Encounter) খবর পেয়েছিল যে, সীমান্তবর্তী ওই জঙ্গল থেকে মাওবাদীরা হামলার পরিকল্পনা করছে। তাই, সেই খবরের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী দ্রুত অভিযান চালায়। এ সময়ই সংঘর্ষটি ঘটে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র এবং বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। তবে, ওড়িশা পুলিশের দাবি, নিহত মাওবাদীর সংখ্যা ১২ নয়, আরও বেশি সংখ্যক মাওবাদী নিহত হয়েছেন।
মাওবাদীদের (Maoists Encounter) বিরুদ্ধে চলমান এই অভিযানে গত ১৭ জানুয়ারি ছত্তীসগঢ়ের বস্তারে মাওবাদীদের পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে কোবরা বাহিনীর দুই জওয়ান আহত হন। কোবরা বাহিনী, সিআরপিএফের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি বাহিনী, ওই এলাকায় অভিযান চালাতে গিয়েছিল। তাদের সঙ্গে ছিল রাজ্য সশস্ত্র পুলিশবাহিনীর সদস্যরা। মাওবাদীদের আইইডি বিস্ফোরণে আহত হয়েছিলেন দুই জওয়ান।
এই ঘটনায় মাওবাদী সংগঠন সিপিআই(মাওবাদী)-এর সশস্ত্র শাখা পিএলজিএ (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি) একটি বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করেছিল, যা নিরাপত্তাবাহিনীর সতর্কতায় ব্যর্থ হয়েছে। সিআরপিএফ এবং পুলিশ যৌথভাবে এখনো সীমানা এলাকার বিভিন্ন অংশে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে, যাতে মাওবাদীদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া যায়।
এই সংঘর্ষে মাওবাদীদের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি, নিরাপত্তাবাহিনীর ঐক্যবদ্ধ এবং সফল অভিযানকে প্রশংসা করা হচ্ছে। তবে, এ ধরনের অভিযান ও সংঘর্ষের মধ্যে কোনও মানুষের জীবনও মূল্যবান এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে চলেছে।