জনতার বিক্ষোভে (Manipur Violence) মণিপুর অগ্নিগর্ভ। ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন। কারফিউ চলছে রাজধানী ইম্ফলের সর্বত্র। পুলিশ ও আধাসেনা লাগাতার গুলি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। ভাইরাল ভিডিও ছবিতে দেখা যাচ্ছে মণিপুরী এক মহিলা একাই চিৎকার করে বলছেন, তাঁকে গুলি করুক রক্ষীরা। প্রতিবাদী ওই মহিলাকে কয়েকজন নারী পুলিশকর্মী সরিয়ে দেন। রাজ্যে বিজেপি সরকার ও মু়খ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের বিরুদ্ধে জাতি সংঘর্ষ থামানোর ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে অগনিত জনতা বিক্ষোভে সরব।
পরিস্থিতি সামাল দিতে কারফিউ জারি হলেও দিনভর ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে মণিপুর যেন সাম্প্রতিক গণবিক্ষোভে রক্তাক্ত বাংলাদেশ। সে দেশে বিক্ষোভকারীদের দমনে যেভাবে পুলিশ ও আধাসেনা রক্ষীরা গুলি চালিয়েছিল প্রায় একইরকম পরিস্থিতি মণিপুরে। গুলি বৃষ্টির মধ্যেই বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর ছবি ছিঁড়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন। এই ভিডিও প্রকাশ করেছে মণিপুর প্রদেশ কংগ্রেস। তাদের কটাক্ষ, রাজ্যে শান্তি ফিরেছে বলে দাবি করলেও মোদী কেন আসছেন না?
মণিপুরের বিক্ষোভকারীরা মোদীর ছবি টেনে নামিয়ে, ছিঁড়ে উল্লসিত। ঠিক একইরকম ক্ষোভ মিশ্রিত উল্লাস দেখা গেছিল বাংলাদেশে গত আগস্ট মাসে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বিকৃত করে সরকারের বিরুদ্ধে স্বৈরাচার শাসনের অভিযোগ এনেছিল বিক্ষোভকারীরা। হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে।
রাজ্যের দুটি প্রধান জনগোষ্ঠী কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে সংঘর্ষে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে রক্তাক্ত মণিপুরে নিহত শত শত। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা ঠিক হলেও গত কয়েকদিন ধরে ফের রক্তাক্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নতুন করে সংঘর্ষে নিহত বেশ কয়েকজন। গুলিবিদ্ধ এক মহিলা।
বিভিন্ন জেনা থেকে আসা ভিডিওগুলিতে স্পষ্ট, ঘরে ঘরে চলছে আগ্নেয়াস্ত্র বানানো ও মজুত করার কাজ। যুযুধান দুই জাতি গোষ্ঠী পরস্পরের প্রতি হামলার অভিযোগ এনেছে। মায়ানমারের সীমান্তবর্তী মণিপুরের সাম্প্রতিক সংঘর্ষে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ও ড্রোন বোমার ব্যবহারে চিন্তিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মণিপুরে গিয়ে তদন্ত করবে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA)।
যে কোনও সময় মণিপুরে বিজেপি সরকারের পতন হতে পারে বলে বিরোধীরা মনে করছে। প্রদেশ বিজেপির অভ্যন্তরে প্রবল ক্ষোভ চলছে। শান্তি ফেরাতে অক্ষম বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব ছাত্ররা মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজ্যপালের সঙ্গে আলোচনাশ্র ফল না পাওয়ায় বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। তাদের তরফে রাজ্যের সর্বত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের না যেতে বলা হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, মণিপুর থেকে অসম রাইফেলস প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এই আধাসামরিক বাহিনী তার কর্মীদের অন্য রাজ্যে স্থানান্তরিত করা শুরু করেছে।