কেন্দ্রীয় বাহিনীতেও কাটছে না জট, মণিপুরে অব্যাহত সন্ত্রাস

মণিপুরে (Manipur) নিরাপত্তা বাহিনীর সাফল্য অব্যাহত। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত একটি সমন্বিত অভিযানে ২০৩টি অস্ত্র যেমন বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) এবং গ্রেনেড…

Manipur arms seizure

মণিপুরে (Manipur) নিরাপত্তা বাহিনীর সাফল্য অব্যাহত। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত একটি সমন্বিত অভিযানে ২০৩টি অস্ত্র যেমন বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) এবং গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। এই অভিযানটি মণিপুরের তেংনৌপাল, কাংপোকপি, চান্দেল এবং চুরাচাঁদপুর জেলায় পরিচালিত হয়েছে।

মণিপুর (Manipur) পুলিশ, অসম রাইফেলস, ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী (সিএপিএফ) এর যৌথ প্রচেষ্টায় এই অভিযান সফল হয়েছে। এই সাফল্য রাজ্যে অবৈধ অস্ত্রের প্রচলন রোধ এবং শান্তি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।মণিপুর পুলিশের মহাপরিচালক (ডিজিপি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

   

বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও সন্দেহজনক স্থানে লুকানো অস্ত্র ও যুদ্ধাস্ত্রের বড় মজুতের তথ্য পাওয়ার পর যৌথ বাহিনী তেংনৌপাল, কাংপোকপি, চান্দেল এবং চুরাচাঁদপুরের পাহাড়ি এলাকায় একযোগে অভিযান শুরু করে। এই অভিযানে ২০৩টি অস্ত্রের মধ্যে রাইফেল, পিস্তল, স্নাইপার রাইফেল, কার্বাইন এবং অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

এছাড়াও, বেশ কয়েকটি গ্রেনেড, আইইডি এবং প্রচুর গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলির মধ্যে স্বয়ংক্রিয় এবং আধা-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রও রয়েছে, যা রাজ্যে অবৈধ কার্যকলাপে ব্যবহারের সম্ভাবনা ছিল।ডিজিপি’র বিবৃতি অনুযায়ী, এই অভিযানগুলি রাজ্যে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা, স্বাভাবিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধার এবং নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা রক্ষার জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। তিনি বলেন, “এই গোয়েন্দা-চালিত, উচ্চ-প্রভাব অভিযানগুলি অবৈধ অস্ত্রের প্রচলন বন্ধ করার ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ। আমরা শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে বদ্ধপরিকর।”

মণিপুরে (Manipur) ২০২৩ সালের মে মাস থেকে জাতিগত সংঘর্ষের কারণে অস্থিরতা চলছে। এই সময়ে পুলিশের অস্ত্রাগার থেকে প্রায় ৬,০০০ অস্ত্র এবং লক্ষাধিক গোলাবারুদ লুট হয়েছিল। এই ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনী অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ দমনে ক্রমাগত অভিযান চালিয়ে আসছে।

গত ১৪ জুন, ২০২৫-এ আরেকটি বড় অভিযানে ৩২৮টি অস্ত্র, ১০টি গ্রেনেড, ৭টি ডেটোনেটর এবং ৫,০০০-এর বেশি গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছিল। এই অভিযানে ১৫১টি এসএলআর রাইফেল, ৬৫টি ইনসাস রাইফেল, ১২টি লাইট মেশিনগান এবং ৬টি একে-সিরিজ রাইফেল উদ্ধার হয়েছিল।

এই সাম্প্রতিক অভিযানে উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলির মধ্যে রয়েছে স্নাইপার রাইফেল, পিস্তল, কার্বাইন এবং স্থানীয়ভাবে তৈরি অস্ত্র। এই অস্ত্রগুলি বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠী বা অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত ব্যক্তিদের ব্যবহারের জন্য লুকিয়ে রাখা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী এই অস্ত্রগুলি মণিপুর পুলিশের হাতে হস্তান্তর করেছে, এবং এ বিষয়ে ভারতীয় অস্ত্র আইনের অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

Advertisements

তদন্ত চলছে, (Manipur) এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য প্রদানের জন্য জনসাধারণের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে।রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মণিপুরে এই ধরনের অভিযান রাজ্যের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে, জাতিগত সংঘর্ষ এবং অবৈধ অস্ত্রের প্রচলন এখনও রাজ্যের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

মণিপুরের (Manipur) গভর্নর অজয় কুমার ভাল্লা গত ফেব্রুয়ারিতে লুট হওয়া অস্ত্র স্বেচ্ছায় সমর্পণের জন্য একটি সময়সীমা ঘোষণা করেছিলেন। এই সময়সীমার মধ্যে প্রায় ১,১০০ অস্ত্র সমর্পিত হয়েছিল, তবে কুকি-জো গোষ্ঠী পৃথক প্রশাসনের দাবি না মানা পর্যন্ত অস্ত্র সমর্পণ না করার ঘোষণা দিয়েছে।

ভারতীয় বায়ুসেনাতে অগ্নিবীর পদে নিয়োগ, আবেদন ১১ জুলাই থেকে

নিরাপত্তা বাহিনীর এই অভিযান মণিপুরে (Manipur) শান্তি পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করেছে। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী জনগণের সহযোগিতা কামনা করেছে, যাতে অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা যায়। এই অভিযানের সাফল্য রাজ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

 

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News