মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন আরোপের পর অমিত শাহ’র প্রথম নিরাপত্তা বৈঠক

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ আজ মণিপুরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম বৈঠক করবেন। কয়েকদিন আগে মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন আরোপিত হওয়ার পর এটি হবে তার প্রথম…

manipur-president-rule-imposition-amit-shah-first-security-meeting

short-samachar

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ আজ মণিপুরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম বৈঠক করবেন। কয়েকদিন আগে মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন আরোপিত হওয়ার পর এটি হবে তার প্রথম বৈঠক। এ বৈঠকে মণিপুরের রাজ্যপাল অজয় কুমার ভল্লা, রাজ্য সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তারা, সেনা কর্মকর্তারা এবং আধা-সেনা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

   

মণিপুরে গত কিছু বছর ধরে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। এই সহিংসতা থামানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, কিন্তু পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, রাজ্যপাল ভল্লা সম্প্রতি মণিপুরে রাষ্ট্রপতির শাসন ঘোষণা করেন, যখন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ পদত্যাগ করেন। রাষ্ট্রপতির শাসন মণিপুরে ১৯৫১ সাল থেকে আরোপিত হয়েছে।

নিরাপত্তা বৈঠকের এক দিন আগে, রাজ্যপাল ভল্লা মণিপুরে বেআইনি এবং লুট হওয়া অস্ত্রধারী অপরাধীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত নির্দেশ জারি করেছিলেন। এর আগে প্রায় ৩০০টি অস্ত্র জমা দেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ২৪৬টি অস্ত্র ছিল মেইতেই উগ্রপন্থী গ্রুপ ‘অরামবাই টেঙ্গল’ এর কাছ থেকে। রাজ্যপাল ভল্লা একাধিক বার তাদের অস্ত্র জমা দেওয়ার জন্য সময়সীমা বাড়িয়েছেন। সম্প্রতি, তিনি বেআইনি অস্ত্র ফেরত দেওয়ার সময়সীমা ৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়েছেন।

রাজ্যপাল ভল্লা, মণিপুরে দায়িত্ব নেওয়ার পর, শান্তি স্থাপনের জন্য একাধিক বৈঠক করেছেন এবং সেখান থেকে তিনি বিভিন্ন পরামর্শ গ্রহণ করেছেন। তিনি রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেছেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এ ছাড়াও, তিনি সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্যকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।

রাজ্যপাল ভল্লা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ একসঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। ভল্লা ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত পাঁচ বছর অমিত শাহ’র সঙ্গে কাজ করেন। শাহ নিজেই তাকে মণিপুরের রাজ্যপাল হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। তাদের একসাথে কাজ করার অভিজ্ঞতা মণিপুরে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার মণিপুরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে, সহিংসতা এখনও পুরোপুরি থামেনি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার মিলে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে যাতে সহিংসতা কমানো যায় এবং রাজ্যের শান্তি বজায় রাখা যায়।

এছাড়াও, মণিপুরে সেনাবাহিনী এবং আধা-সেনা বাহিনীর মোতায়েন বাড়ানো হয়েছে। সম্প্রতি, নিরাপত্তা বাহিনী বহু দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে এবং বেশ কিছু বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করেছে।

রাজ্যপাল ভল্লা, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একাধিক বৈঠক করেছেন, যার মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক, রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা, এবং সাধারণ জনগণের মতামত সংগ্রহ করা হয়েছে। তার লক্ষ্য মণিপুরে শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো। এই বৈঠকগুলোতে, তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে উপযুক্ত দিকনির্দেশনা দিয়েছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন।

মণিপুরে সহিংসতা বন্ধ করার জন্য সরকারের পদক্ষেপ সত্ত্বেও, পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। রাজ্যপাল ভল্লা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের অঙ্গীকার অনুযায়ী, মণিপুরের শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য আরও অনেক কাজ বাকি। তবে, সরকারের প্রচেষ্টার ফলে একদিন এই সহিংসতার অবসান ঘটবে, এমনটাই আশা করছেন নাগরিকরা।

মণিপুরের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর, এবং এটি পুরো রাজ্যের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাজ্যপাল অজয় কুমার ভল্লা’র নেতৃত্বে মণিপুরে শান্তি স্থাপনের উদ্যোগগুলোর প্রতি জনগণের আশাবাদ বজায় রয়েছে। এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এবং জনসাধারণের জীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।