মণিপুরে ৭ দিনে অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশ, হুঁশিয়ারি গভর্নরের

মণিপুর রাজ্যের গভর্নর অজয় কুমার ভল্লা আজ এক ঘোষণায় বলেছেন, রাজ্যের সব সম্প্রদায়ের মানুষকে ৭ দিনের মধ্যে চুরি করা এবং অবৈধভাবে রাখা অস্ত্র আত্মসমর্পণ করতে…

manipur-governor-surrender-weapons-deadline-warning

মণিপুর রাজ্যের গভর্নর অজয় কুমার ভল্লা আজ এক ঘোষণায় বলেছেন, রাজ্যের সব সম্প্রদায়ের মানুষকে ৭ দিনের মধ্যে চুরি করা এবং অবৈধভাবে রাখা অস্ত্র আত্মসমর্পণ করতে হবে। তবে, ৭ দিনের মেয়াদ শেষ হলে, যারা অবৈধ বা চুরি করা অস্ত্র রাখবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আশ্বস্ত করেন যে, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে যারা অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দেবেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। 

মণিপুর রাজ্য, যা মিয়ানমারের সাথে একটি খোলা সীমান্ত শেয়ার করে এবং যেখানে মেইতেই সম্প্রদায় এবং কুকি নামে পরিচিত একাধিক উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষ প্রায় দুই বছর ধরে চলছিল। বর্তমানে রাষ্ট্রপতির শাসনের অধীনে রয়েছে। ৯ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং এবং তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা পদত্যাগ করেন, এরপর গভর্নর বিধানসভাকে স্থগিত ঘোষণা করেন, যার ফলে এমএলএদের ক্ষমতা শূন্য হয়ে পড়ে।

   

গভর্নর ভল্লা তার বিবৃতিতে বলেন, “মণিপুরের জনগণ, উপত্যকা এবং পাহাড় উভয়েই গত ২০ মাস ধরে একাধিক দুঃখজনক ঘটনার কারণে ব্যাপক কষ্ট ভোগ করেছে, যা শান্তি এবং সাম্প্রদায়িক ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য রাজ্যের সমস্ত সম্প্রদায়কে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে, যাতে মানুষ তাদের স্বাভাবিক দৈনন্দিন কার্যক্রমে ফিরে যেতে পারে।”

গভর্নরের এই আবেদন এমন একটি সময়ে এসেছে যখন রাজ্য জুড়ে সহিংসতা ও অস্থিরতার ঘটনা বেড়েছে। মণিপুরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত, এবং সেখানে সংঘর্ষের কারণে বহু পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্য সরকার এই সহিংসতা থামানোর জন্য শক্ত পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত, এবং গভর্নরের ঘোষণায় শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য জনগণের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।

গভর্নর আরও বলেন, “রাজ্যের সব সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে যে আস্থা ও একতা দরকার তা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কোনো সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে শত্রুতার প্ররোচনা না দেওয়া, শান্তি বজায় রাখা এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করাই এখন রাজ্যের অগ্রগতি ও শান্তির জন্য জরুরি।”

মণিপুরের পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে অস্থির, এবং রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপগুলি শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, রাজ্যের জনগণের মধ্যে এই পদক্ষেপের প্রতি বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কিছু জনগণ এটি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন, আবার কিছু মানুষ মনে করছেন যে কঠোর পদক্ষেপ পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলতে পারে।