বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে এবার রাইসেন জেলার মান্ডিদীপ (Madhya Pradesh) ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়ার রপ্তানিকারীরা বাংলাদেশের সঙ্গে পণ্য রপ্তানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত, মান্ডিদীপ (Madhya Pradesh) থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হতো, যেমন তুলো, সুতো, ট্রাক্টর, ওষুধপত্র, অটো ও রেলের যন্ত্রাংশ, প্লাস্টিক, কাগজ, স্টিলের আসবাব ইত্যাদি। তবে, সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের অব্যাহত পরিস্থিতিতে, রপ্তানিকারীরা আর্থিকভাবে বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে রপ্তানি বন্ধ করার সিদ্ধান্তের পর, মান্ডিদীপের (Madhya Pradesh) প্রেসিডেন্ট ড. রাজীব আগরওয়াল জানিয়েছেন, বাংলাদেশের মোট পণ্য চাহিদার ৭০-৮০ শতাংশ ভারত থেকে আসে। তাই, ভারতীয় রপ্তানির পরিমাণ ধীরে ধীরে কমিয়ে দিলে, মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেবে। তিনি বলেন, গত বছরই একটি বৈঠকের মাধ্যমে তারা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। বাংলাদেশের প্রতি বছরে রপ্তানির আর্থিক মূল্য প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। মান্ডিদীপের শিল্প এলাকায় প্রায় ৪৫০টি ইউনিট রয়েছে, যার বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ২১ শতাংশ বা ১৮ হাজার কোটি টাকা আসে রপ্তানি থেকে।
ড. রাজীব আগরওয়াল আরও জানিয়েছেন, তারা দেশের স্বার্থে এবং জাতীয় নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। যদিও তারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে পারবেন না, তবে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো সম্ভব। তার মতে, রাশিয়া এবং তার মতো দেশের বাজার খোলার সুবিধা থাকায়, রপ্তানিকারীরা অন্য দেশে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারিত করতে পারবেন।
এছাড়া, রপ্তানিকারীরা জানিয়েছেন, মধ্যপ্রদেশের অন্যান্য শিল্প সংস্থা, ছত্তিশগড় এবং তামিলনাড়ুর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানও বাংলাদেশে রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বাংলাদেশে রপ্তানি বন্ধ করে অর্থনৈতিকভাবে তারা প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে চান।
এই সিদ্ধান্তটি শুধু বাংলাদেশে রপ্তানি বন্ধের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, বরং অন্যান্য আন্তর্জাতিক বাজারে, বিশেষ করে রাশিয়ার বাজারে নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারিত করার জন্য এক নতুন পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করার মাধ্যমে, রপ্তানিকারীরা উচ্চ লাভের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন, কারণ ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া অনেক পণ্যের আকাল অনুভব করছে এবং সেখানে ভারতীয় পণ্যের চাহিদা বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে, মান্ডিদীপের রপ্তানিকারীরা তাদের দেশের স্বার্থে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের খেয়াল রেখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবং তারা আশা করছেন এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা পৌঁছবে।