কংগ্রেস নেত্রী খুনে তৎপর পুলিশ, এক সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার

হরিয়ানার রোহতক শহরে কংগ্রেস নেত্রী হিমানি নারওয়ালের খুনের ঘটনায় পুলিশের তৎপরতা বেড়ে গেছে। দুই দিন আগে পরিত্যক্ত একটি নীল স্যুটকেস থেকে ২২ বছর বয়সী হিমানি…

Man Arrested 2 Days After Haryana Congress Worker’s Body Found in Suitcase

হরিয়ানার রোহতক শহরে কংগ্রেস নেত্রী হিমানি নারওয়ালের খুনের ঘটনায় পুলিশের তৎপরতা বেড়ে গেছে। দুই দিন আগে পরিত্যক্ত একটি নীল স্যুটকেস থেকে ২২ বছর বয়সী হিমানি নারওয়ালের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এর পর পরই হরিয়ানা পুলিশ এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে, যাতে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হতে পারে।

হিমানি নারওয়াল হরিয়ানা কংগ্রেসের একজন বিশিষ্ট নেত্রী ছিলেন এবং ভারত জোড়ো যাত্রার সময় তিনি রাহুল গান্ধীর সাথে হাঁটতে দেখা গিয়েছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের খবর মুহূর্তের মধ্যে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। শনিবার, রোহতক বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি পরিত্যক্ত নীল স্যুটকেস থেকে হিমানির মৃতদেহ উদ্ধার হয়, যা ছিল অত্যন্ত নির্মমভাবে খুন হওয়ার প্রমাণ। তার গলায় স্কার্ফ ছিল, হাতে মেহেন্দি, এবং শরীরে নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ধারণা করছে, হিমানি নারওয়ালকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়েছিল এবং এরপর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। দেহটি প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে সুটকেসে ভরে ফেলা হয়, যা অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর।

kolkata24x7-sports-News

   

হিমানির মা, সবিতা নারওয়াল, এই হত্যাকাণ্ডের পর সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “আমার মেয়ে কংগ্রেসের জন্য অনেক আত্মত্যাগ করেছে। বহু শীর্ষ কংগ্রেস নেতা আমাদের বাড়িতে আসতেন। হিমানির রাজনৈতিক উত্থান কিছু মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। তাদের মধ্যে অনেকেই নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নিয়ে শঙ্কিত ছিলেন, আর সেই কারণে এই খুন হতে পারে।” সবিতা নারওয়ালের এই অভিযোগে নতুন একটি মোড় আসে, যেখানে তিনি দাবি করেন যে, হিমানির হত্যার পিছনে কংগ্রেস দলের কারও হাত থাকতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে হরিয়ানা পুলিশ তদন্তের গতি বাড়িয়েছে এবং অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশের তদন্তকারী দল এখন চেষ্টা করছে হিমানি নারওয়ালের হত্যার সমস্ত রহস্য বের করার জন্য। তাদের লক্ষ্য, ঘটনাস্থল এবং হত্যার সাথে সম্পর্কিত প্রতিটি তথ্যের মাধ্যমে সত্যের মুখোমুখি হওয়া।

হিমানি নারওয়ালের হত্যাকাণ্ডের পর কংগ্রেস দলেও একটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। হিমানির রাজনৈতিক প্রভাব এবং তার সামাজিক উত্থান অনেকেরই মনে হয় ছিল অস্বস্তির কারণ। তবে, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে কংগ্রেসের কোনো শীর্ষ নেতা যুক্ত কিনা, তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।

এই ঘটনা তদন্তাধীন থাকলেও হরিয়ানার পুলিশ ও তদন্তকারী দল একযোগে কাজ করছে যাতে দ্রুত হত্যার রহস্য উন্মোচন করা যায়। হিমানির পরিবারের দাবি, তাঁদের মেয়ের হত্যার সঠিক বিচার হোক এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।

এদিকে, হিমানির হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কংগ্রেস দলের মধ্যে নানা গুঞ্জন ও আলোচনা শুরু হয়েছে, এবং বিরোধী দলগুলো এই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। একদিকে হিমানির মা, অন্যদিকে পুলিশের তদন্ত—সব কিছু মিলিয়ে এই খুনের ঘটনাটি এখন হরিয়ানা রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।