জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর শ্রীনগরের নকশবন্দ সাহিবে শহিদ কবরস্থান (Mamata) পরিদর্শনে বাধা দেওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই ঘটনাকে তিনি (Mamata)‘অগ্রহণযোগ্য, লজ্জাজনক এবং মর্মান্তিক’ বলে অভিহিত করেছেন। প্রসঙ্গত কয়েকদিন আগেই কলকাতা সফরে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন ওমর আবদুল্লাহ। বাঙালিদের তিনি আওহ্বান জানিয়েছেন কাশ্মীরে। স্বভাবতই মমতা-ওমরের বৈঠকে কিছুটা ট্রাফিক জ্যাম কমেছে কলকাতা থেকে কাশ্মীরের রাস্তায়।
সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্টে মমতা (Mamata) লিখেছেন, “শহিদদের কবরস্থান পরিদর্শনে কী ভুল? এটি কেবল দুর্ভাগ্যজনকই নয়, এটি একজন নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকারকেও কেড়ে নেয়। আজ সকালে নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর সঙ্গে যা ঘটেছে তা অগ্রহণযোগ্য। শকিং। লজ্জাজনক।” এই ঘটনা জম্মু ও কাশ্মীরে আইনশৃঙ্খলা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
১৩ জুলাই, ১৯৩১-এ মহারাজা হরি সিংয়ের ডোগরা বাহিনীর গুলিতে ২২ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর স্মরণে প্রতি বছর জম্মু ও কাশ্মীরে শহিদ দিবস পালিত হয়। এই ঘটনার স্মৃতি হিসেবে শ্রীনগরের নকশবন্দ সাহিবে অবস্থিত মাজার-ই-শুহাদা কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। কিন্তু এ বছর, ১৪ জুলাই ওমর আবদুল্লাহ এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি)-এর নেতারা এই কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে গেলে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী তাঁদের বাধা দেয়।
ওমর জানিয়েছেন, (Mamata)তাঁর বাড়ির বাইরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল, সাঁজোয়া যান দিয়ে রাস্তা অবরুদ্ধ করা হয় এবং কবরস্থানের প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি পাঁচিল টপকে কবরস্থানে প্রবেশ করে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং ফাতিহা পড়েন।
ওমর আবদুল্লাহ সামাজিক মাধ্যমে (Mamata)লিখেছেন, “একটি সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপে বাড়ির দরজা বাইরে থেকে তালাবন্দী করা হয়েছে, পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী জেলারের মতো মোতায়েন করা হয়েছে এবং শ্রীনগরের প্রধান সেতুগুলি অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এসব শুধুমাত্র মানুষকে একটি ঐতিহাসিক কবরস্থানে যাওয়া থেকে বিরত করার জন্য।” তিনি এই ঘটনাকে কাশ্মীরিদের কণ্ঠস্বর ও অধিকারের জন্য সংগ্রামকারী শহিদদের প্রতি অসম্মান বলে অভিহিত করেছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata)এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেন, “একজন নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এমন আচরণ গণতন্ত্রের মূল্যবোধের উপর আঘাত।” তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের উপরোক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার সমালোচনা করে জানান, এটি কাশ্মীরের জনগণের মৌলিক অধিকার হরণের একটি উদাহরণ।
মমতার (Mamata)এই সমর্থন ওমরের সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক সাক্ষাতের পরিপ্রেক্ষিতে আরও তাৎপর্যপূর্ণ। গত ১০ জুলাই কলকাতায় তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারপার্সন মমতা ওমরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর শহিদ দিবসকে জম্মু ও কাশ্মীরের সরকারি ছুটির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এই বছর নিরাপত্তা বাহিনী কবরস্থানে প্রবেশে বাধা দেওয়ায় ওমর ছাড়াও ন্যাশনাল কনফারেন্সের সভাপতি ফারুক আবদুল্লাহ (Mamata)এবং মন্ত্রী সাকিনা ইত্তু শ্রদ্ধা নিবেদনে বাধার সম্মুখীন হন। হুরিয়ত চেয়ারম্যান মিরওয়াইজ উমর ফারুক এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “এটি কাশ্মীরিদের প্রতিদিনের অভিজ্ঞতার প্রতিফলন, যেখানে তাঁদের স্বাধীনতা ও অধিকার ক্রমাগত খর্ব করা হয়।”
৭০ বছর পর লর্ডসে বিরল রেকর্ড ভারতের
এই ঘটনা জম্মু ও কাশ্মীরে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে বৃহত্তর প্রশ্ন তুলেছে। মমতার (Mamata)সমর্থন এই ইস্যুকে জাতীয় পর্যায়ে আলোচনার বিষয় করে তুলেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা কেন্দ্রীয় সরকার ও জম্মু ও কাশ্মীরের প্রশাসনের মধ্যে উত্তেজনাকে আরও গভীর করতে পারে। মমতা ও ওমরের এই সংহতি ভবিষ্যতে দুই রাজ্যের মধ্যে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করতে পারে।