মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata) রাজ্যের ২৩টি জেলায় শিল্পায়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির এক মহৎ পরিকল্পনার ঘোষণা করেছেন। এই উদ্যোগের প্রথম ধাপে ১১টি জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্প সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্বে উৎপাদন ইউনিট স্থাপন করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর (mamata) বক্তব্য অনুযায়ী, এই পরিকল্পনা রাজ্যের অর্থনীতিকে নতুন গতি দেবে এবং হাজার হাজার যুবক-যুবতীর জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।
দেশের কন্যা’কে অপমান নয়! সোফিয়া কুরেশি ইস্যুতে ক্ষুব্ধ মহিলা কমিশন
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন
মুখ্যমন্ত্রী (mamata) জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের লক্ষ্য হল শিল্পায়নের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের শীর্ষ অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটিতে পরিণত করা। এই উদ্দেশ্যে, রাজ্যের ২৩টি জেলায় শিল্প স্থাপনের জন্য পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে চলেছে সরকার।
প্রাথমিকভাবে ১১টি জেলা— যেমন পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, হুগলি, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং নদিয়া— চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই জেলাগুলিতে শিল্প স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই জমি বিভিন্ন শিল্প সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হবে (mamata)। শিল্পায়নের এই উদ্যোগের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হল নিউ টাউনে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলের অধীনে হাউসিং অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (হিডকো) এর সহযোগিতায় ২৫ একর জমির উপর একটি এন্টারটেইনমেন্ট, টেকনোলজি এবং কালচারাল পার্ক স্থাপন।
এই পার্ক, যার বাংলা নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিশ্ব অঙ্গন’, ক্রিয়েটিভিটি এবং ইনোভেশনের একটি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে। এটি তথ্যপ্রযুক্তি, মিডিয়া, এন্টারটেইনমেন্ট এবং সাংস্কৃতিক কার্যকলাপের জন্য একটি হাব হবে, যা তরুণ উদ্যোক্তা এবং শিল্পীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করবে। এই পার্কটি রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে প্রচার করার পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সমন্বয় ঘটিয়ে অর্থনৈতিক উন্নতি ত্বরান্বিত করবে।
গ্ৰুপ সি এবং গ্রূপ ডি কর্মচারীদের উপর দের উপর বিশেষ জোর (mamata)
মুখ্যমন্ত্রী (mamata) আরও জানিয়েছেন যে, শিল্পায়নের পাশাপাশি রাজ্য সরকার চাকরি হারা গ্ৰুপ সি এবং গ্রূপ ডি কর্মচারীদের উপর দের উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে। এই লক্ষ্যে, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদের জন্য ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলিহুড স্কিম’ চালু করা হয়েছে।
এই প্রকল্পের অধীনে, গ্রুপ সি পদের জন্য ২০,০০০ এবং গ্রুপ ডি পদের জন্য ২৫,০০০ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তার সংবাদ সম্মেলনে বলেন গ্ৰুপ সি এবং ডি কর্মচারীদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, তাই এই ব্যবস্থা।
মুখ্যমন্ত্রী (mamata) জানিয়েছেন যে, এই শিল্পায়ন পরিকল্পনা রাজ্যের প্রতিটি জেলায় সমানভাবে বাস্তবায়িত হবে। তিনি বলেন, “আমরা চাই পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলায় শিল্প স্থাপিত হোক, যাতে আমাদের যুবক-যুবতীরা নিজেদের এলাকায় কাজের সুযোগ পায়।
জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষের স্বার্থ রক্ষা
আমরা (mamata) জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষের স্বার্থ রক্ষা করব এবং শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করব।” এই প্রকল্পে স্থানীয় কৃষক এবং জমির মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হবে।
এই উদ্যোগ পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে নতুন গতি সঞ্চার করবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি, উৎপাদন, এবং পর্যটন শিল্প ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। নতুন শিল্প ইউনিট এবং বিশ্ব অঙ্গনের মতো উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলি এই প্রবৃদ্ধিকে আরও ত্বরান্বিত করবে। এছাড়া, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের মাধ্যমে রাজ্যের বেকারত্বের হার কমবে এবং যুবকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে।
‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ
রাজ্য সরকারের এই দ্রুত শিল্পায়নের লক্ষ্য ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের শিল্প মানচিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করতে সহায়তা করবে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা রাজ্যের জনগণের মধ্যে নতুন আশা ও উৎসাহ সঞ্চার করেছে। আগামী দিনে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন কীভাবে এগিয়ে যায়, তা দেখার জন্য সকলেই অপেক্ষায় রয়েছে।