পটনার শার্পশ্যুটার গ্রেফতার কলকাতার শাপুরজি পালোনজিতে

পটনার পরশ হাসপাতালে (Patna Hospital) চাঞ্চল্যকর গুলি কাণ্ডে সরব হয়েছিলেন রাজনৈতিক মহল। এবার সেই কাণ্ডে জড়িত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হল নিউটাউন শাপুরজি থেকে। এই ঘটনায়…

Patna Hospital case

পটনার পরশ হাসপাতালে (Patna Hospital) চাঞ্চল্যকর গুলি কাণ্ডে সরব হয়েছিলেন রাজনৈতিক মহল। এবার সেই কাণ্ডে জড়িত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হল নিউটাউন শাপুরজি থেকে। এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির তীব্র সমালোচনা করেছেন।

তিনি বলেছেন, “সমস্ত অপরাধীরা মনে করে তৃণমূল তাদের নিজস্ব সরকার। পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলার সম্পূর্ণ অভাব রয়েছে এবং সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা, সাংবিধানিক ব্যবস্থার ভাঙন এবং রাজনীতিকরণের দ্বারা প্রশাসন পরিচালিত হচ্ছে এটি শুধু বিহারের অসামাজিক বা অপরাধীদের বিষয় নয়, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি এমন যে এমনকি আইএসআইএস এজেন্টরাও রাজ্য থেকে ধরা পড়ছে।”

   

এই মন্তব্য রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনার ঝড় তুলেছে।গত ১৭ জুলাই পাটনার পরশ হাসপাতালে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে, যেখানে পাঁচজন অস্ত্রধারী ব্যক্তি হাসপাতালের আইসিইউতে প্রবেশ করে একজন কয়েদি, চন্দন মিশ্রকে গুলি করে হত্যা করে।

চন্দন মিশ্র, বিহারের বক্সার জেলার বাসিন্দা, একাধিক হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন এবং চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে পরশ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, পাঁচজন অস্ত্রধারী ব্যক্তি হাসপাতালের করিডোর দিয়ে হেঁটে গিয়ে চন্দনের রুমে প্রবেশ করে। 

তাকে একাধিক গুলি করে পালিয়ে যায়। পাটনার এসএসপি কার্তিকেয় শর্মা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে এটি প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাংয়ের কাজ বলে মনে হচ্ছে, এবং হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটি এবং সম্ভাব্য জড়িত থাকার বিষয়টিও তদন্ত করা হচ্ছে।

এই ঘটনার পর অভিযুক্তদের নিউটাউন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই গ্রেফতারি বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে। শমীক ভট্টাচার্যের মন্তব্যে তিনি পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকারের উপর তীব্র আক্রমণ করেছেন।

তিনি দাবি করেন যে রাজ্যে অপরাধীদের মনোবল এতটাই বেশি যে তারা নির্ভয়ে অপরাধ করে এবং এমনকি আইএসআইএসের মতো জঙ্গি সংগঠনের এজেন্টরাও এখানে ধরা পড়ছে। তিনি আরও বলেছেন যে রাজ্যে সাংবিধানিক ব্যবস্থার সম্পূর্ণ ভাঙন ঘটেছে এবং প্রশাসন সম্পূর্ণরূপে রাজনীতিকরণের শিকার।

Advertisements

বিহারের রাজনৈতিক মহলও এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদব বিহারের নীতীশ কুমার সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, “অপরাধীরা হাসপাতালের আইসিইউতে প্রবেশ করে রোগীকে গুলি করেছে। বিহারে কি কেউ নিরাপদ?”

তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ২০০৫ সালের আগে বিহারে এমন ঘটনা কি ঘটত? বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী বিজয় সিনহা এই ঘটনাকে “দুঃখজনক এবং গভীরভাবে বিরক্তিকর” বলে অভিহিত করে জানিয়েছেন যে অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। তবে, পশ্চিমবঙ্গে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের পর ভট্টাচার্যের মন্তব্য এই ঘটনাকে একটি আন্তঃরাজ্য বিতর্কে রূপান্তরিত করেছে।

এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুর্বলতাকে সামনে এনেছে। পশ্চিমবঙ্গে অপরাধীদের আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। শমীক ভট্টাচার্যের আইএসআইএস এজেন্টদের ধরা পড়ার উল্লেখ রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নতুন প্রশ্ন তুলেছে। তবে, তৃণমূল নেতারা দাবি করেছেন যে রাজ্য পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ এই অভিযোগগুলিকে ভিত্তিহীন প্রমাণ করে।

ভয়াবহ পুরী, নাবালিকার গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন, বিজেপিকে তুলোধোনা নবীন পট্টনায়কের

এই ঘটনা আগামী বিহার বিধানসভা নির্বাচন এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপরও প্রভাব ফেলতে পারে। বিজেপি এই ঘটনাকে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, যখন তৃণমূল দাবি করছে যে তারা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।