বিজেপি-কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন, নির্বাচন কমিশনের কঠোর পদক্ষেপ

মহারাষ্ট্র (maharashtra) এবং ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) বিধানসভা নির্বাচনে (election) বিজেপি এবং কংগ্রেসের একে অপরের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশন (election commission) উভয় দলকেই নোটিশ…

Election commission of India denies any irregularities in Maharashtra election alliged by Congress

মহারাষ্ট্র (maharashtra) এবং ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) বিধানসভা নির্বাচনে (election) বিজেপি এবং কংগ্রেসের একে অপরের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশন (election commission) উভয় দলকেই নোটিশ পাঠিয়েছে। নির্বাচন কমিশন বিজেপি (BJP) সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং কংগ্রেস (Congress) সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে পৃথক চিঠি লিখে অভিযোগের জবাব দিতে বলেছে। এর পাশাপাশি, কমিশন উভয় পক্ষের মতামতও চেয়েছে এবং তাদের মধ্যে অভিযোগ বিনিময় করেছে।

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, কারণ এতে নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন, বিশেষত নির্বাচনী প্রচারণার সময় আচরণগত শৃঙ্খলা ও নীরবতার বিরোধিতা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়, তারকা প্রচারক ও রাজনৈতিক নেতাদের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণের জন্য কিছু নতুন নির্দেশনা দিয়েছিল, এবং এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১৮ নভেম্বর, ২০২৪ পর্যন্ত উভয় দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক উত্তর চেয়েছে।

   

ঝাড়খণ্ডে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপির অভিযোগঃ
ঝাড়খণ্ডে বিজেপি অভিযোগ করেছে যে কংগ্রেস দল নির্বাচনের একদিন আগে অর্থাৎ “নীরব সময়কাল” চলাকালীন তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে, যা আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন। ভারতীয় নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, নির্বাচনের পূর্বে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কোনো দলের পক্ষ থেকে ইশতেহার বা নতুন কোনও ঘোষণা করা নিষিদ্ধ থাকে, কারণ এতে ভোটারদের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। বিজেপি অভিযোগ করেছে যে কংগ্রেস সংবিধান ও নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪-এ সুধীর শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বে বিজেপি প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে তাদের অভিযোগ জানায়। বিজেপির দাবি, ১১ নভেম্বর থেকে নির্বাচনের পূর্ববর্তী সময় (যা ৫টা থেকে ১২টা রাত পর্যন্ত সময়কাল হিসেবে চিহ্নিত ছিল) কংগ্রেসের ইশতেহার প্রকাশ করা হয়, যা আচরণবিধির বিরোধী। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বিজেপি কমিশনের কাছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে।

মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের দাবি: বিজেপি নেতার নির্বাচনী প্রচার নিষিদ্ধ করার
অন্যদিকে, মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস বিজেপি রাজ্যসভা সাংসদ ধনঞ্জয় মহাদিকের নির্বাচনী প্রচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, মহাদিক তার নির্বাচনী প্রচারে মহিলাদের প্রতি একটি আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন যে, “কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মহিলারা সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না।” কংগ্রেসের মতে, এটি স্পষ্টভাবে ভোটের জন্য প্রলোভন সৃষ্টি করার চেষ্টা এবং নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। কংগ্রেস এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করে মহাদিকের নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা:
নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগগুলো গুরুত্ব সহকারে পরীক্ষা করছে এবং দলগুলোর কাছ থেকে বিস্তারিত জবাব চেয়েছে। এর মাধ্যমে, কমিশন নির্বাচনকালে নির্বাচনী আচরণবিধি বজায় রাখতে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছে। কমিশন আশা করছে যে, এর মাধ্যমে আগামী দিনে নির্বাচন সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন আরও কঠোরভাবে পালিত হবে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবে না।

এমন সময়ে যখন ভারতীয় রাজনীতিতে আচরণবিধি লঙ্ঘন একটি বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপগুলি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। নির্বাচনী প্রচারণায় নিয়ম মেনে চলা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন এই ধরনের পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে, যাতে জনগণের মধ্যে স্বচ্ছতা বজায় থাকে এবং তারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।

বিজেপি এবং কংগ্রেস উভয় দলই এই অভিযোগগুলো নিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জবাব দিচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে যে নির্বাচন কমিশন তাদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে এবং ভোটের সুষ্ঠুতা বজায় রাখবে।