মহারাষ্ট্রের ভোটের (Maharashtra Election) আগে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ফের আক্রমনাত্মক বিজেপি (BJP)। সম্প্রতি নাগপুরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপি অভিযোগ করেছে, ওই অনুষ্ঠানে কংগ্রেসের (National Congress)পক্ষ থেকে বিতরণ করা হয় ভারতের সংবিধানের খালি কপি, যার পৃষ্ঠাগুলোতে কোনও লেখা ছিল না। বিজেপির শেয়ার করা একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, সংবিধানের প্রচ্ছদে ‘কনস্টিটিউশন অব ইন্ডিয়া’ লেখা থাকলেও ভেতরের পৃষ্ঠাগুলো সম্পূর্ণ খালি। কেবল প্রথম পাতায় প্রস্তাবনা ছিল, বাকি সব পাতা ফাঁকা।
আরজি কর মামলায় সিবিআইকে দ্রুত তদন্ত চালানোর নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
এই ঘটনা ঘিরে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন শুরু হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে লাল মোড়কে মোড়া সংবিধানের বই বিতরণ করেছিল কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেই বইকেও আর্বান-নক্সাল পন্থীদের ‘রেড বুক’ বলেও কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছে দেবেন্দ্র ফড়নবীশ।
বিশেষ করে যখন মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন দোরগোড়ায়, তখন বিজেপি এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে শুরু করেছে। বিজেপির দাবি, সংবিধান রক্ষার প্রতিশ্রুতি নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন হলেও, কংগ্রেসের এই পদক্ষেপ সংবিধান এবং সংরক্ষণ নীতির প্রতি তাদের অবজ্ঞা প্রকাশ করছে।
India-Canada conflict: তীব্রতর ভারত-কানাডা সংঘাত, দু-দেশেই বন্ধ হল কনস্যুলেটস
বিজেপি এই ঘটনাকে রাহুল গান্ধীর এবং কংগ্রেসের “সংরক্ষণ বিরোধী এবং সংবিধান বিরোধী” মানসিকতার প্রতীক বলে দাবি করেছে। বিজেপির মহারাষ্ট্র শাখার সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে পোস্ট করা ভিডিওটি প্রচুর সংখ্যক মানুষ দেখেছেন এবং শেয়ার করেছেন।
ভিডিওটির মাধ্যমে বিজেপি প্রশ্ন তুলেছে, সংবিধান রক্ষার যে বার্তা কংগ্রেস দেওয়ার চেষ্টা করছে, তা আসলে কেবল মুখের কথা, কর্মের মাধ্যমে নয়।
বিজেপির নেতারা এই ঘটনার সমালোচনা করে বলেছেন, রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস দল সংবিধান রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তাঁরা সংবিধান এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থার প্রতি আসলেই শ্রদ্ধাশীল নন। বিজেপি নেতা ও মহারাষ্ট্রের শিক্ষামন্ত্রী চন্দ্রকান্ত পাতিল এই ঘটনাকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, “যে দল সংবিধানের খালি কপি বিতরণ করে, তারা সংবিধান রক্ষার প্রতিশ্রুতি কীভাবে দেয়?” তাঁর দাবি, এই ঘটনা কংগ্রেস দলের দ্বৈত চরিত্রকে প্রকাশ করছে এবং জনগণ তা প্রত্যক্ষ করছে।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো না হলেও দলের কয়েকজন কর্মী এই অভিযোগকে “বিজেপির প্রোপাগান্ডা” বলে অভিহিত করেছেন। তাঁদের মতে, বিজেপি এই ঘটনাকে বিরোধী দলকে অপমান করার উদ্দেশ্যে ইস্যু হিসেবে তুলে ধরেছে।
কংগ্রেসের সমর্থকদের মধ্যে অনেকেই দাবি করছেন যে এটি হয়তো প্রিন্টিং ত্রুটি হতে পারে এবং বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে এটি নিয়ে রাজনীতি করছে।
ফের জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় উত্তেজনা, অনুচ্ছেদ ৩৭০ নিয়ে শাসক-বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষ তুঙ্গে
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনার ফলে মহারাষ্ট্রের নির্বাচনে কংগ্রেসের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। সংবিধান এবং সংরক্ষণ নীতির গুরুত্ব মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে খুবই গভীর, বিশেষ করে সামাজিক ন্যায়বিচার এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার বিষয়ে। তাই, বিজেপি এই ঘটনা নিয়ে যে প্রচারণা চালাচ্ছে, তা কংগ্রেসের জনপ্রিয়তাকে প্রভাবিত করতে পারে।
অতএব, নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ঘটনাটি দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়াবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আগামী দিনে মহারাষ্ট্রের ভোটাররা কোন পক্ষের প্রতি আস্থা রাখবেন, তা এই ধরনের ইস্যু কীভাবে তাঁদের মতামতকে প্রভাবিত করবে তার উপর অনেকাংশেই নির্ভর করছে।