প্রয়াগরাজ: অন্তিম পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে মহাকুম্ভ৷ আজ, বুধবার মহাশিবরাত্রি৷ আজই
প্রয়াগরাজে ত্রিবেণী সঙ্গমে শেষ অমৃত স্নান। রাত থেকেই গঙ্গা, যমুনা ও অন্তঃসলীলা সরস্বতী নদীর ত্রিবেণী সঙ্গমে পূণ্যস্নান সারতে ভিড় জমিয়েছেন ভক্তরা।
মহাশিবরাত্রি, শিব ও পার্বতীর ঐশ্বরিক মিলনের উৎসব৷ কুম্ভ মেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রতি ১২ বছরে একবার এই মেলা অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে অংশগ্রহণ করলে ভক্তরা ‘মোক্ষ’ লাভের আশ্বাস পান। পুরাণ অনুযায়ী, মহাশিবরাত্রি সেই দিন, যখন শিব সমুদ্র মন্থন করে অমৃত কুম্ভ (অমৃত পাত্র) উৎপন্ন করেন, যা কুম্ভ মেলার মূল প্রতীক।
আজ এক কোটি ভক্তের স্নান করার আশা রয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভোর ২টা নাগাদ ১১.৬৬ লাখ ভক্ত সঙ্গমে স্নান করছেন। পরবর্তী দুই ঘণ্টায় সংখ্যা ২৫.৬৪ লাখে পৌঁছায় এবং ভোর ৬টার মধ্যে তা ৪১.১১ লাখে পৌঁছায়।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সকল ভক্তকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি টুইট করেছেন, “মহাশিবরাত্রির এই পবিত্র দিনে ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করতে আসা সকল ভক্তদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা। মহাকুম্ভ মেলা ২০২৫, প্রয়াগরাজে ভগবান শিব ও মা গঙ্গার আশীর্বাদে সকলের মঙ্গল হোক।”
মহাকুম্ভ মেলার স্নান উপলক্ষে অনেক ভক্ত রাত থেকেই সঙ্গমের তীরে উপস্থিত হন। তারা “ব্রহ্ম মুহূর্ত” অর্থাৎ পবিত্র সময়ে স্নান করার জন্য অপেক্ষা করছেন। অনেকেই নির্ধারিত সময়ের আগেই স্নান রীতি পালন করছেন।
মহাকুম্ভ মেলায় বিশেষ স্নান দিনগুলো ছিল পৌষ পূর্ণিমা (১৩ জানুয়ারি), মকর সংক্রান্তি (১৪ জানুয়ারি), মৌনি অমাবস্যা (২৯ জানুয়ারি), বসন্ত পঞ্চমী (৩ ফেব্রুয়ারি), মাঘী পূর্ণিমা (১২ ফেব্রুয়ারি) এবং মহাশিবরাত্রি (২৬ ফেব্রুয়ারি)। এই দিনগুলোর মধ্যে তিনটি ছিল ‘অমৃত স্নান’।
মঙ্গলবার, প্রায় ১.৩৩ কোটি ভক্ত সঙ্গম এবং অন্যান্য ঘাটে স্নান করেছেন, ফলে মেলার মোট ভিড়ের সংখ্যা ৬৫ কোটির বেশি হয়ে গেছে।
নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, আধাসামরিক বাহিনী এবং বিপর্যয় প্রতিরোধ দল মোতায়েন করা হয়েছে। রেল স্টেশন, সড়ক এবং প্রবেশপথে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সিসিটিভি ও ড্রোনের মাধ্যমে ভিড়ের পরিস্থিতি তদারকি করা হচ্ছে। ভক্তদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে “নো ভেহিকল জোন” ঘোষণা করা হয়েছে, যাতে সঙ্গম এলাকায় গাড়ি প্রবেশ না করে।
মেলা শেষ হওয়ার পর ভক্তদের নিরাপদে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত ট্রেন চালানো হয়েছে, এবং স্টেশনগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।