উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ(Yogi Adityanath) বুধবার মহাকুম্ভ মেলার আয়োজনে এক গুরুত্বপূর্ণ ক্যাবিনেট বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে এলাহাবাদ (প্রয়াগরাজ), চিত্রকূট, বারাণসি এবং বিন্ধ্যাচলসহ ধর্মীয় শহরগুলির উন্নয়নের জন্য বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা করেছেন। বৈঠকে যোগী আদিত্যনাথ জানান, সরকার প্রয়াগরাজ-চিত্রকূট উন্নয়ন অঞ্চল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং বারাণসী-বিন্ধ্যা উন্নয়ন অঞ্চল গঠনেও উদ্যোগী হবে। তিনি বলেছেন, “এগুলি জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের মতো হবে।”
এছাড়া তিনি জানান যে, এই অঞ্চলের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে আলাদা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে এবং প্রতিটি অঞ্চলের জন্য পৃথক বাজেট বরাদ্দ করা হবে। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলগুলিতে দ্রুত উন্নয়ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) বলেছেন, “আমরা প্রয়াগরাজ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলির ধারাবাহিক উন্নয়ন চাই। এজন্য আমরা আলাদা উন্নয়ন অঞ্চল গঠনের প্রয়োজন অনুভব করেছি।” তিনি আরো জানান যে, পূর্বনির্ধারিত গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে প্রয়াগরাজ থেকে শুরু হয়ে মির্জাপুর, ভাদোহী, কাশী, চন্দৌলি এবং গাজীপুর হয়ে পুর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ের সাথে সংযুক্ত হবে। এছাড়া সোনভদ্রের জাতীয় মহাসড়কেও এই এক্সপ্রেসওয়ে সংযুক্ত হবে।
যোগী আদিত্যনাথ আরও জানিয়েছেন, প্রয়াগরাজে হেটাপট্টি এবং সালোরির মধ্যে গঙ্গার উপর একটি ছয় লেনের সেতু এবং আরাইল এলাকায় একটি চার লেনের সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বুন্দেলখণ্ড এক্সপ্রেসওয়ে চিত্রকূট থেকে শুরু হয়ে গঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের সাথে সংযুক্ত হবে এবং মধ্যপ্রদেশের রেওয়া পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে।
যোগী আদিত্যনাথ এবং তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা গঙ্গায় স্নান করেন এবং একে অপরকে গঙ্গার জল ছিটিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। এরপর তারা একাধিক পুরোহিতদের সহায়তায় গঙ্গা পূজা করেন।
উপ-মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক বলেছেন, “দেশ এবং উত্তরপ্রদেশ সনাতন ঐতিহ্যের ভিত্তিতে চলছে।” তাঁর মতে, এই ধরনের প্রকল্পগুলি শুধু উন্নয়ন নয়, ধর্মীয় শহরগুলির ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে সম্মান জানিয়ে তৈরি করা হচ্ছে।
অন্যদিকে সমাজবাদী পার্টির সভাপতি ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব যোগী সরকারের এই উদ্যোগকে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “কুম্ভ একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সেখানে মন্ত্রিসভার বৈঠক করা একটি খারাপ অভ্যাস। কুম্ভের নামে রাজনীতি করা হচ্ছে, এবং সেখানে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।”
অখিলেশ যাদব যোগী সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার সমালোচনা করে বলেন, “যোগী সরকার উন্নয়নের কোনও ধারণা নেই। তাদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা শুধুমাত্র জনগণের মন জেতার জন্য নেওয়া হচ্ছে, জনগণের কল্যাণে নয়।”
তবে, যোগী আদিত্যনাথ সরকারের পক্ষ থেকে এসব পদক্ষেপকে মহাকুম্ভ ও ধর্মীয় শহরগুলির উন্নতি এক অগ্রগতি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে এই অঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সড়ক যোগাযোগ এবং পর্যটন উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।