গেরুয়া রাজ্যের সরকারি স্কুলে সূর্য নমস্কারের বদলে নামাজ! অভিযুক্ত শিক্ষক

madhya-pradesh-school-namaz-controversy-burhanpur

ভোপাল: আবারও বিতর্কে জড়াল মধ্যপ্রদেশের এক সরকারি স্কুল। বুরহানপুর জেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক শিশুদের সূর্য নমস্কার শেখানোর বদলে নামাজ পড়তে শেখাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি সামনে আসতেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের ঝড়। অভিযুক্ত শিক্ষক জবুর আহমেদ তাডভিকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করেছে শিক্ষা দফতর।

Advertisements

ঘটনার সূত্রপাত বুরহানপুর জেলার শাহপুর ব্লকের এক সরকারি স্কুলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন সকালে বিদ্যালয়ে প্রার্থনা সভার সময় সূর্য নমস্কারের বদলে শিক্ষক ওই শিশুদের নামাজ পড়তে শেখাতেন। শিশুরা বাড়িতে গিয়ে নামাজ পড়ার অভ্যাস শুরু করলে অভিভাবকদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়। কয়েকজন অভিভাবক তাদের সন্তানদের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারেন, এরপরই শুরু হয় প্রতিবাদ।

   

ইউপিএ আমলের “কয়লা কেলেঙ্কারির” চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস

অভিযোগ জানানো হয় জেলা শিক্ষা আধিকারিকের কাছে। তদন্তে সত্যতা মিলতেই অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়। জেলা শিক্ষা আধিকারিকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “আমরা অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তদন্ত শুরু করি। প্রাথমিকভাবে প্রমাণ মেলায় শিক্ষক জবুর আহমেদ তাডভিকে সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে পৃথক বিভাগীয় তদন্তও শুরু হয়েছে।”

Advertisements

এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক রং লাগতে শুরু করেছে। বিজেপি নেতৃত্ব বলেছে, “এটি শুধু শিক্ষার অবমাননা নয়, বরং সাংস্কৃতিক বিকৃতি। সরকারি বিদ্যালয়ে জাতীয় ও ঐতিহ্যবাহী অনুশীলনের বদলে ধর্মীয় অনুশাসন শেখানো সম্পূর্ণ ভুল।” রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রীও এই বিষয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছেন। তাঁর কথায়, “মধ্যপ্রদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সূর্য নমস্কার বা দেশাত্মবোধক প্রার্থনা বাধ্যতামূলক। কেউ তা অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অন্যদিকে, স্থানীয় কিছু সংগঠন এই ঘটনার তদন্তে সতর্কতা অবলম্বনের দাবি তুলেছে। তাদের বক্তব্য, “শিক্ষক ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় শিক্ষাদান করছিলেন কিনা তা নিরপেক্ষভাবে খতিয়ে দেখা উচিত।” উল্লেখ্য, মধ্যপ্রদেশের সরকারি স্কুলগুলোতে কয়েক বছর ধরেই সূর্য নমস্কার, যোগাসন এবং দেশাত্মবোধক গান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর মনে করে, এসব কার্যক্রম শিশুদের মধ্যে শৃঙ্খলা ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করে।

তবে এই ঘটনার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে কারণ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা চালু হওয়া দেশের ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষাব্যবস্থার পরিপন্থী বলে অনেকেই মনে করছেন। অভিভাবকদের একাংশ বলেছেন, “আমরা চাই আমাদের সন্তানরা পড়াশোনা করুক, ধর্ম নয়। স্কুলে ধর্ম শেখানো হলে সমাজে বিভাজন তৈরি হবে।” অন্যদিকে, অভিযুক্ত শিক্ষক এখনো পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি দায়িত্বে ফিরতে পারবেন না।