ভোপাল: ক্যালসিয়াম কার্বাইড গান বিক্রি, ক্রয় ও সংরক্ষণের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করল মধ্যপ্রদেশ সরকার৷ দীপাবলির উৎসবের সময় এই ক্ষুদ্র বিস্ফোরক খেলনার কারণে ৩০০-এরও বেশি শিশুর চোখ গুরুতর আহত হয়েছে৷ যার মধ্যে ১০ শিশুর দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে গিয়েছে।
প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে তৈরি এই খেলনা পাত্রগুলোতে ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও জল মিশিয়ে ছোট বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, যা আতশবাজির শব্দের মতো শোনা যায়। কিন্তু এই “খেলনা” চিকিৎসকদের মতে একেবারেই বিপজ্জনক।
মধ্যপ্রদেশের ভোপাল, গ্বালিয়র এবং বিদিশা জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে শুরু করেছে। সমস্ত উপ-জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (SDM) এবং পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ফায়ারক্র্যাকার দোকান ও রাস্তাঘাটের স্টলগুলোতে তল্লাশি চালিয়ে অবৈধ কার্বাইড গান জব্দ করতে।
ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী রাজেন্দ্র শুক্লা বলেন, “চোখে আঘাতপ্রাপ্ত শিশুদের অবস্থা আমরা মনিটর করছি। যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, তাদের দৃষ্টি রক্ষা নিশ্চিত করা হচ্ছে। যারা এই অবৈধ পাইপ ব্যারেল ব্যবহার করেছে বা বিক্রি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করা হবে। যারা শিশুদের ক্ষতি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা একটি দায়িত্বহীন আচরণ, যা শিশুদের জন্য বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।”
চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, ক্যালসিয়াম কার্বাইড ও জলের সংযোগে যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে, তা বিস্ফোরক গ্যাস ও স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি করে, যা দীর্ঘমেয়াদি চোখের ক্ষতি, বার্ন এবং দৃষ্টিশক্তি হারানোর কারণ হতে পারে।
গ্যাস্ট্রোলজি হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রের রিপোর্ট অনুযায়ী:
গ্বালিয়রের জয়া আরোগ্য হাসপাতাল: ১৯ জন আহত, ৮ জনের জরুরি চোখের সার্জারি, ২ জনের কর্নিয়া সম্পূর্ণভাবে নষ্ট।
অন্যান্য হাসপাতাল যেমন হমীদিয়া, BMCHRC, কমলা নেহরু, সেবা সদন ও জেপি হাসপাতালে প্রচুর চোখের ক্ষত ও বার্নের রোগী ভর্তি।
জেলা ভিত্তিক আহতদের সংখ্যা:
ভোপাল: ১৫০
বিদিশা: ৫০
সেহোর: ২৮
গ্বালিয়র: ১৯
শিবপুরী: ১০
উজ্জয়ন: ১৫
রায়সেন: ৩
দতিয়া: ২
রাতলম: ১
ইন্দোর: ১১
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী উৎসবে জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে হবে এবং শিশুদের অবৈধ ও বিপজ্জনক খেলনা ও আতশবাজি থেকে দূরে রাখতে হবে।


