দেশি অস্ত্রে আস্থা, অপারেশন সিঁদুরের পর প্রতিরক্ষায় ১ লক্ষ কোটির ছাড়পত্র কেন্দ্রের

নয়াদিল্লি: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ সাফল্যের ঠিক পরেই রণনীতিগত দিক থেকে বড় দাও দিচ্ছে ভারত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ Defence Acquisition Council (DAC) শুক্রবার এক ধাক্কায়…

Made in India Defense Boost

নয়াদিল্লি: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ সাফল্যের ঠিক পরেই রণনীতিগত দিক থেকে বড় দাও দিচ্ছে ভারত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ Defence Acquisition Council (DAC) শুক্রবার এক ধাক্কায় ₹১.০৫ লক্ষ কোটি টাকার ১০টি সামরিক প্রকল্পে ছাড়পত্র দিল, যার পুরোটাই আসছে দেশীয় উৎস থেকে। অর্থাৎ ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ সামরিক শক্তির উপর নির্ভরতা আরও পাকাপোক্ত হচ্ছে।

এই সিদ্ধান্ত শুধু প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্যই নয়, দেশীয় শিল্প ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের জন্যও একটা পরিস্কার বার্তা—স্বনির্ভরতার দিশা স্পষ্ট।

   

কী কী আসছে বাহিনীর হাতে?

DAC-এর বৈঠকে যেসব প্রকল্পে ‘Acceptance of Necessity (AoN)’ দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

Armoured Recovery Vehicle — যুদ্ধক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত ট্যাঙ্ক বা অস্ত্র সরাতে সহায়ক

Electronic Warfare System — আধুনিক ইলেকট্রনিক জ্যামিং ও নজরদারির জন্য

Tri-Services Integrated Inventory Management System — সেনা, নৌ ও বায়ুসেনার জন্য অভিন্ন সাপ্লাই চেইন মডিউল

Quick Reaction Surface-to-Air Missile (QRSAM) — সীমান্তে শত্রুপক্ষের বিমান হানার প্রতিরোধে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র

এছাড়া সমুদ্রে সম্ভাব্য বিপদের মোকাবিলায় আসছে-

Advertisements
  • মুরড মাইনস ও মাইন কাউন্টারমেজার ভেসেল
  • সুপার র‍্যাপিড গান মাউন্ট
  • সাবমারসিবল অটোনোমাস ভেসেলস

এই সমস্ত অস্ত্র ও সিস্টেমই তৈরি হবে দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের অংশীদারিত্বে, যার কেন্দ্রে রয়েছে DRDO ও বেসরকারি প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলি।

অপারেশন সিঁদুরের প্রতিচ্ছবি এই সিদ্ধান্তে Made in India Defense Boost

মাটি ছোঁয়া যুদ্ধ হোক বা আকাশপথে চরম হামলা- অপারেশন সিঁদুরে ভারত আকাশ, আকাশতীর, ব্রহ্মোসের মতো দেশীয় প্রযুক্তি নির্ভর অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করেই ন’টি সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটি ও সামরিক পরিকাঠামো ধ্বংস করে দেয় পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকে।

চিন থেকে পাওয়া HQ-9 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দিয়ে পাকিস্তান চেষ্টা করেছিল ভারতের আকাশ মিসাইল আটকাতে, কিন্তু তা কার্যত ব্যর্থ হয়। এই ঘটনাই ভারতের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে—দেশীয় প্রযুক্তিই ভবিষ্যতের উত্তর।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বক্তব্যে স্পষ্ট বার্তা

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, “এই অধিগ্রহণগুলি শুধু বাহিনীর যুদ্ধক্ষমতা বাড়াবে না, বরং আমাদের সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থাও আরও কার্যকর হবে। যুদ্ধক্ষেত্রে দ্রুত প্রতিক্রিয়ার সক্ষমতা বাড়বে।”

আত্মনির্ভরতার পথে সাহসী পা

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র বরাবরই ভারতের আমদানিনির্ভর একটি খাত। কিন্তু গত কয়েক বছরে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের আওতায় এই নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো। এ দিন DAC-এর বৈঠকে যেভাবে একসঙ্গে দশটি প্রকল্পে ছাড়পত্র দেওয়া হল, তা স্বদেশি প্রতিরক্ষা উৎপাদনের প্রতি সরকারের আস্থা স্পষ্ট করে দিল।

সরাসরি যুদ্ধের মাঠে নেমে নয়, টেকনোলজি ও আধিপত্যের লড়াইয়ে এখন ভারত নিজের জায়গা করে নিচ্ছে নিজের অস্ত্রে, নিজের ভরসায়।