দিল্লি হাইকোর্টে এসডিপিআই সভাপতি এম কে ফয়জির জামিন আবেদনে ইডিকে নোটিশ

দিল্লি হাইকোর্ট শুক্রবার সামাজিক গণতান্ত্রিক পার্টি অব ইন্ডিয়া (SDPI)-র সভাপতি এম কে ফয়জির জামিন আবেদনের উপর শুনানি করতে সম্মত হয়েছে এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে (ED) নোটিশ…

M K Fouzi bail hearing

দিল্লি হাইকোর্ট শুক্রবার সামাজিক গণতান্ত্রিক পার্টি অব ইন্ডিয়া (SDPI)-র সভাপতি এম কে ফয়জির জামিন আবেদনের উপর শুনানি করতে সম্মত হয়েছে এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে (ED) নোটিশ জারি করেছে। বিচারপতি নীনা বংসল কৃষ্ণা এই নির্দেশ দেন। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৬ অক্টোবর। একই দিনে অপর দুই অভিযুক্তের জামিন আবেদনের শুনানিও নির্ধারিত হয়েছে।

ট্রায়াল কোর্টে আগের জামিন খারিজ:

গত ২৮ আগস্ট দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্ট ফয়জির জামিন আবেদন খারিজ করেছিল। বিশেষ বিচারক চন্দর জিত সিং জানিয়েছিলেন, ফয়জি ইডির একাধিক সমন এড়িয়ে গিয়েছিলেন এবং তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তদন্তে বাধা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আদালতের ভাষায়, “তার অতীত আচরণ প্রমাণ করে তিনি আইনের প্রক্রিয়া এড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন, ফলে তাকে ‘ফ্লাইট রিস্ক’ বলা যেতে পারে।”

   

আদালতের পর্যবেক্ষণ: M K Fouzi bail hearing

আদালত জানায়, ফয়জি একটি রাজনৈতিক দলের সভাপতি হওয়ায় তার প্রভাব যথেষ্ট। সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া দল হিসেবে এসডিপিআই-এর সংগঠন কাঠামো ও কর্মীরা তার নির্দেশে চলতে অভ্যস্ত। ফলে তিনি প্রয়োজনে তদন্ত প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারেন। আদালত আরও উল্লেখ করে, ইডি যে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে তাতে এসডিপিআইকে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন (PMLA)-এর ধারা ৭০ প্রয়োগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

ইডির অভিযোগ:

ইডির দাবি, ফয়জি প্রায় ৩.৫০ লক্ষ টাকা পিএফআই (PFI) থেকে ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে দুইটি ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পেয়েছেন। এই টাকা পিএফআই ক্যাডারদের প্রশিক্ষণের কাজে ব্যয় করার জন্য দেওয়া হয়েছিল। তদন্ত সংস্থার মতে, এসডিপিআই আসলে নিষিদ্ধ ঘোষিত পিএফআই-এর রাজনৈতিক শাখা।

Advertisements

২০২২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্র সরকার পিএফআই-কে বেআইনি সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে। তার আগে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তর প্রদেশ এন্টি টেররিজম স্কোয়াড (ATS) দুই পিএফআই সদস্য — আনশাদ বদরুদ্দিন ও ফিরোজ কে-কে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরক, একটি পিস্তল এবং একাধিক কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। এই মামলার প্রেক্ষিতে ফয়জির অর্থ লেনদেন ও যোগসাজশের দিকটি ইডি তদন্ত করছে।

ফয়জির গ্রেপ্তারি:

এ বছর মার্চ মাসে ইডি ফয়জিকে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে, যখন তিনি কোচি থেকে দিল্লি ফিরছিলেন। সংস্থার দাবি, ফয়জি পিএফআই-এর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যুক্ত ছিলেন এবং ২০০৯ সালে এসডিপিআই গঠন করেন।

প্রতিরক্ষা পক্ষের দাবি:

ফয়জির আইনজীবী রাজত ভরদ্বাজের মাধ্যমে দাখিলকৃত জামিন আবেদনে বলা হয়েছে, ফয়জির এই মামলার সঙ্গে সরাসরি কোনো ভূমিকা নেই। তবে আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানায়, তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল এবং সমন জারি হয়েছে, যা তিনি চ্যালেঞ্জ করেননি।

আগামী শুনানি:

দিল্লি হাইকোর্ট এখন ইডির বক্তব্য শোনার পর ফয়জির জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী ৬ অক্টোবরের শুনানিকে ঘিরে রাজনৈতিক ও আইনি মহলে ইতিমধ্যেই তীব্র আগ্রহ তৈরি হয়েছে, কারণ এই মামলায় এসডিপিআই-এর রাজনৈতিক অস্তিত্ব ও ভূমিকার প্রশ্নও জড়িয়ে রয়েছে।