মসজিদে মাইক বন্ধ করতে পুলিশকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে, হাই কোর্টের নয়া নির্দেশনা

মহারাষ্ট্রের বম্বে হাই (Bombay High Court) কোর্ট সম্প্রতি মসজিদে মাইক বা লাউডস্পিকার ব্যবহারের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, যা সমাজের জন্য একটি বিশেষ বার্তা বহন…

Calcutta HC Gives Green Signal for ICDS Supervisor Recruitment, Resolving 26-Year-Old Stalemate

মহারাষ্ট্রের বম্বে হাই (Bombay High Court) কোর্ট সম্প্রতি মসজিদে মাইক বা লাউডস্পিকার ব্যবহারের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, যা সমাজের জন্য একটি বিশেষ বার্তা বহন করে। আদালত বলেছে, ‘‘কোনও ধর্মের ক্ষেত্রেই লাউডস্পিকার অপরিহার্য নয়’’ এবং এভাবে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই পর্যবেক্ষণটি মূলত মুম্বইয়ের (Bombay High Court) কুরলা এলাকায় দুই আবাসিক কমিটির দায়ের করা একটি মামলার পর এসেছে, যেখানে মসজিদ এবং মাদ্রাসায় উচ্চ শব্দের লাউডস্পিকার ব্যবহারের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা অসুবিধার শিকার হচ্ছিলেন।

বম্বে হাই কোর্টের (Bombay High Court) দুই বিচারপতি এএস গড়করি এবং এসসি চন্দক বলেছেন, ‘‘লাউডস্পিকার বা মাইক কোনও ধর্মের জন্য অপরিহার্য নয়’’। তারা আরও উল্লেখ করেছেন, এটি কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসের অংশও নয়, বরং শব্দদূষণ রোধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। আদালত আরো বলেছে, ‘‘এখনও যদি শব্দদূষণ নিয়ে অভিযোগ আসলে পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে’’ এবং মহারাষ্ট্র সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, ‘‘স্বয়ংক্রিয় ডেসিবেল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করার জন্য’’।

   

এই পর্যবেক্ষণটি একটি সামগ্রিক বার্তা দেয়, যা শুধু মসজিদ বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নয়, বরং সব ধর্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এতে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ধর্মীয় কার্যকলাপের মধ্যে নাগরিকদের স্বস্তি এবং শান্তির অবিচ্ছেদ্য গুরুত্ব রয়েছে। আদালতের মতে, শব্দদূষণ কখনোই সহ্য করা উচিত নয়, বিশেষত যখন তা মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে ব্যাহত করে। আর এই ধরনের অভিযোগগুলি যেন কোনও ধর্মের বিরুদ্ধে ঘৃণা বা বৈষম্য সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে ব্যবহার না হয়, সেজন্য পুলিশের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এটি মূলত একটি সামাজিক সচেতনতার বার্তা, যা সমাজের সব অংশকেই সমানভাবে দায়িত্বশীল হতে আহ্বান জানায়। আমাদের যেন মনে রাখতে হবে, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং অধিকার সব মানুষেরই রয়েছে, তবে সেটা অন্যদের ব্যক্তিগত শান্তি এবং অধিকার লঙ্ঘন না করে হতে হবে।

তবে এই পর্যবেক্ষণটি শুধু ধর্মীয় স্থান বা মসজিদ- মাদ্রাসার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়। এটি আমাদের জানান দেয় যে, যেকোনো ধরনের শব্দদূষণই মানবিক অধিকার ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে, আদালত স্পষ্টভাবে বলেছে যে, শব্দদূষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুলিশ প্রশাসনকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সমাজকর্মী কিংবা সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমাদের এই সিদ্ধান্তের গুরুত্ব উপলব্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। এই ধরনের আদালতের সিদ্ধান্ত আমাদের শিক্ষা দেয় যে, সামাজিক শান্তি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে আমাদের সকলকে মিলিতভাবে কাজ করতে হবে, যেন একদিকে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা হয় এবং অন্যদিকে সাধারণ মানুষের জীবনের মান উন্নত হয়।