নয়াদিল্লি: লোকসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের আনা তিনটি নতুন বিলকে কেন্দ্র করে বুধবার সংসদ উত্তাল। প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রী যদি গুরুতর অপরাধে গ্রেপ্তার হয়ে টানা ৩০ দিন হাজতে থাকেন, তবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাঁদের পদ থেকে অপসারণের বিধান রাখা হয়েছে এই প্রস্তাবিত আইনে। সরকার পক্ষ এই বিধানকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরলেও বিরোধী শিবিরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
সরকারের পদক্ষেপকে তুলোধনা ওয়েসির
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েসি লোকসভায় দাঁড়িয়ে সরকারের এই পদক্ষেপকে তুলোধনা করেন। তাঁর কটাক্ষ, “এটি কার্যত ভারতকে পুলিশ রাষ্ট্রে পরিণত করবে। জনগণের ভোটাধিকার এবং নির্বাচিত সরকারের ওপর সরাসরি আঘাত হানছে সরকার।” ওয়েসি আরও বলেন, এই আইন কার্যকর হলে তদন্ত সংস্থাগুলি অভিযোগ ও সন্দেহের ভিত্তিতেই বিচারক ও শাস্তিদাতা হয়ে উঠবে। এমনকি নাজি জার্মানির কুখ্যাত পুলিশ বাহিনী ‘গেস্টাপো’র সঙ্গেও তুলনা করেন তিনি।
বিরোধী সাংসদদের স্লোগান Lok Sabha new bills debate
ওয়েসির বক্তব্যের সময়ই বিরোধী দলের সাংসদরা স্লোগান দিতে দিতে ওয়েলে নেমে আসেন। কংগ্রেস সাংসদ মানীশ তিওয়ারি বিলটিকে সরাসরি সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ধ্বংসের প্রচেষ্টা বলে আখ্যা দেন। তাঁর অভিযোগ, “এই বিল রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের মাধ্যমে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপব্যবহারের দরজা খুলে দেবে, যা বারবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে নিন্দিত হয়েছে।”
বিতর্কিত বিলগুলির মধ্যে রয়েছে — Government of Union Territories (Amendment) Bill, 2025, Constitution (One Hundred and Thirtieth Amendment) Bill, 2025, এবং Jammu and Kashmir Reorganisation (Amendment) Bill, 2025। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিলগুলি সংসদের যৌথ কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেন।
অপসারণের দায়িত্বে কারা
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের ক্ষমতা থাকবে রাষ্ট্রপতির হাতে, মুখ্যমন্ত্রীকে অপসারণ করবেন রাজ্যপাল, আর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে দায়িত্ব থাকবে লেফটেন্যান্ট গভর্নরের ওপর।
বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, এই আইন কার্যকর হলে কেন্দ্রীয় সরকার সহজেই বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির সরকার ভেঙে দিতে পারবে। ইতিমধ্যেই আইনটিকে ‘ড্রাকোনিয়ান’ বা ‘অত্যাচারী’ বলে অভিহিত করেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির।
লোকসভায় আলোচনার শুরুতেই স্পষ্ট হয়ে গেল, নির্বাচিত সরকারকে ঘিরে রাজনৈতিক লড়াইয়ের নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে।
Bharat: Three controversial new bills introduced in Lok Sabha propose the automatic removal of PMs and CMs if arrested for 30 days. The opposition, led by Asaduddin Owaisi and Manish Tewari, slams the legislation as a step towards a “police state” that undermines democracy and the Constitution’s basic structure. Get the details on the heated debate and protests.