শ্রীনগর , ৩ ডিসেম্বর ২০২৫: হিমালয়ের কোলে লাইন অফ কন্ট্রোল (Terror Infiltration Threat at LOC 2025) এখনো যেন একটা উত্তপ্ত যুদ্ধক্ষেত্রের মতো। তুষারপাতের ছায়ায় ঢাকা পাহাড়গুলোর মাঝে লুকিয়ে আছে ৬৯টি সক্রিয় টেরর লঞ্চপ্যাড, যেখানে ১০০ থেকে ১২০ জঙ্গি শীতের আগে অনুপ্রবেশের জন্য প্রস্তুত। বিএসএফের গোয়েন্দা ইউনিট এই হুমকির সতর্কবাণী জারি করেছে, বলছে—আতঙ্কবাদী গোষ্ঠীগুলো রুট বদলাচ্ছে, ড্রোন ব্যবহার করে সীমান্তের রেকি নিচ্ছে।
এই বছরে ইতিমধ্যে চারটি অনুপ্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করে আট জঙ্গিকে নিকেশ করেছে বিএসএফ, আর অপারেশন সিঁদুরে সীমান্তের গ্রিড হাই অ্যালার্টে রয়েছে। এই খবর শুধু সামরিক নয়, বরং কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের উপর ছায়া ফেলছে—পর্যটকেরা কমে গেছে, গ্রামের লোকেরা রাতে দরজা বন্ধ করে ঘুমায়।এপ্রিলের ২২ তারিখে পহেলগাঁওয়ে সেই নৃশংস হামলা ২৬ জন নিরীহ পর্যটক এবং স্থানীয় পোনিওয়ালার প্রাণহানি।
সেমিফাইনালের আগে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ঋত্বিক তিওয়ারি
এই ঘটনা যেন আগুনের ফুলকি, যা মে মাসে অপারেশন সিঁদুরের জন্ম দেয়। ৭ থেকে ১০ মে পর্যন্ত ভারতীয় বিমানবাহিনী এবং আর্টিলারির আঘাতে পাকিস্তানের এলাকায় টেরর ক্যাম্প এবং লঞ্চপ্যাডগুলো ধ্বংস হয়। বিএসএফ কাশ্মীর ফ্রন্টিয়ারের আইজি অশোক যাদব বলেছেন, “সিন্দুরের প্রথম পর্যায়ে আমরা বিরাট ক্ষতি করেছি। পাকিস্তান কয়েকটা লঞ্চপ্যাড আরও গভীরে সরিয়েছে, কিন্তু আমাদের গ্রিডের চোখ এড়াতে পারেনি।”
এই অপারেশনের পরও ৬৯টি লঞ্চপ্যাড সক্রিয় রয়েছে যেখানে লস্কর-ই-তৈবা, জৈশ-ই-মোহাম্মদের মতো গোষ্ঠীর ক্যাডাররা অপেক্ষায়। যাদবের কথায়, “আমাদের জি ব্রাঞ্চ সব লঞ্চপ্যাডের উপর নজর রাখছে, যেখানে ১০০-১২০ জঙ্গি অনুপ্রবেশের জন্য তৈরি। শীতের আগে তারা চেষ্টা করবে, কারণ তুষারপাতের পর পথ বন্ধ হয়ে যাবে।”এই হুমকির মুখে বিএসএফের প্রস্তুতি যেন একটা অদম্য দৃঢ়তার প্রতীক। এই বছরে চারটি অনুপ্রবেশের চেষ্টা দুটো সিঁদুরের আগে, দুটো পরে ব্যর্থ হয়েছে, যাতে ১৩ জঙ্গির মধ্যে আটজনকে হত্যা করা হয়েছে।
যাদব বলেছেন, “আমরা আরও নতুন রুট শনাক্ত করেছি, যেখানে আর্মির সাথে সমন্বয় করে কভারেজ বাড়িয়েছি। ড্রোনের রেকি চলছে, কিন্তু আমাদের নাইট সার্ভেইলেন্স টুলস এবং অস্ত্রশস্ত্র আপগ্রেড করা হয়েছে।” সিঁদুরের দ্বিতীয় পর্যায় যেকোনো মুহূর্তে সক্রিয় হতে পারে, যদি পাকিস্তান কোনো ‘মিসঅ্যাডভেঞ্চার’ করে। এছাড়া, বিএসএফ ২২টি জয়েন্ট অপারেশনে অংশ নিয়েছে, যাতে অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং যুদ্ধের সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে। কাশ্মীরের উত্তরাঞ্চলে বিএসএফের ১৩টি কোম্পানি স্থানীয় ফোর্সের সাথে কাজ করছে, যাতে উপত্যকায় সিকিউরিটি গ্রিড মজবুত থাকে।
কিন্তু এই সতর্কতার পিছনে রয়েছে একটা কঠিন বাস্তবতা। LOC তে কঠোর আবহাওয়া, অসমতল ভূমি এবং বর্ডার অ্যাকশন টিম (বিএটি) আক্রমণ, স্নাইপিং এবং সিজফায়ার লঙ্ঘনের হুমকি—এসবের মধ্যে বিএসএফের জওয়ানরা দাঁড়িয়ে আছে। যাদব বলেছেন, “আমরা সাইবার থ্রেটস মোকাবিলায় ট্রেনিং দিচ্ছি, এবং প্যারা জাম্পিং কোর্স শুরু করেছি, যাতে পাহাড়-জঙ্গলে স্পেশাল অপারেশন করা যায়।”

