ভারতের বিজ্ঞাপন জগতের এক অমর প্রতিভা, পীযূষ পাণ্ডে (Piyush Pandey)। শুক্রবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ৭০ বছর বয়সে প্রয়াত এই বিজ্ঞাপন বিজ্ঞানী ছিলেন ফেভিকল, ক্যাডবেরি, এশিয়ান পেইন্টসসহ অসংখ্য আইকনিক বিজ্ঞাপনের স্রষ্টা। তাঁর মৃত্যুতে সমগ্র ক্রিয়েটিভ ও বিজ্ঞাপন জগত শোকস্তব্ধ।
পাণ্ডে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তাঁর শেষকৃত্য শুক্রবার সকাল ১১টায় মুম্বাইয়ের শিবাজি পার্কে সম্পন্ন হবে। পাণ্ডের নেতৃত্বে, ওগিলভি ইন্ডিয়া ১২ বছর ধরে দ্য ইকোনমিক টাইমসের পরিচালিত স্বাধীন জরিপ ‘এজেন্সি রেকোনার’-এ শীর্ষে ছিল। এই সময়ে তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় বিজ্ঞাপন জগতে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। পীযূষ পাণ্ডের অবদান শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন জগতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি ২০১৩ সালে জন আব্রাহামের সঙ্গে ‘মাদ্রাস ক্যাফে’ সিনেমায় অভিনয় করেন এবং আইসিআইসিআই ব্যাংকের ‘ম্যাজিক পেন্সিল প্রোজেক্ট ভিডিও’তে কাজ করেন। এছাড়াও, তিনি জাতীয় একতা ও সমন্বয়কে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে প্রখ্যাত গান ‘মিলে সুর মেরা তোমহারা’র কথার রচনায় সহায়তা করেন। পাণ্ডে ‘ভোপাল এক্সপ্রেস’ ছবির চিত্রনাট্যেও সহলিখক ছিলেন।
প্রায় চার দশক ধরে পাণ্ডে বিজ্ঞাপন শিল্পে সক্রিয় ছিলেন। তিনি ওগিলভির ‘চিফ ক্রিয়েটিভ অফিসার ওয়ার্ল্ডওয়াইড’ এবং ‘এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান ইন্ডিয়া’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
পাণ্ডে ১৯৮২ সালে ওগিলভিতে যোগ দেন। তাঁর প্রথম বিজ্ঞাপন ছিল সানলাইট ডিটারজেন্টের জন্য। ছয় বছর পর তিনি প্রতিষ্ঠানের ক্রিয়েটিভ বিভাগে যোগ দেন এবং এরপর অসংখ্য বিখ্যাত বিজ্ঞাপন তৈরি করেন। ফেভিকল-এর “কা জোড়” ক্যাম্পেইন, ক্যাডবেরি-এর ‘ডেয়ারিং গার্ল’ সিরিজ, এশিয়ান পেইন্টস-এর রঙিন প্রচারণা, লুনা মপেড এবং ফরচুন অয়েলের প্রচারণাসহ অনেক ব্র্যান্ডের জন্য তিনি আইকনিক বিজ্ঞাপন তৈরি করেছেন।
পাণ্ডের প্রতিভা শুধুমাত্র ব্যবসায়িক সাফল্যই আনেনি; তিনি ভারতের বিজ্ঞাপন শিল্পকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাঁর সৃষ্টিশীলতা এবং গল্প বলার ক্ষমতা তাঁকে সহকর্মীদের মাঝে এক অনন্য ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।
২০১৬ সালে তাঁর সাফল্য এবং অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী পুরস্কার দিয়েছিল। এটি দেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সিভিলিয়ান অ্যাওয়ার্ডগুলোর মধ্যে একটি।


