রাইপুর: মহারাষ্ট্রের পর ছত্তিসগড়, নকশালবাদ (Naxals) ছেড়ে সমাজের মূলস্রোতে ফেরার ঢল। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের গাদচিরোলিতে বরিষ্ঠ নকশাল নেতা ভুপথি সহ ৬০ জন নকশালের গণ-আত্মসমর্পণের ধারাকে বজায় রাখল ছত্তিসগড়ের নকশাল সংগঠন। বুধবার ছত্তিসগড়ের ৩ টি জেলা থেকে ৪৩ জন মহিলা ক্যাডার সহ মোট ৭৮ জন নকশাল আত্মসমর্পণ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
সুকমা জেলায়, দশজন মহিলা সহ ২৭ জন নকশাল আত্মসমর্পণ করেছেন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে ১৬ জন নকশালের মোট মাথার দাম ছিল ৫০ লক্ষ। পাশাপাশি, কাঁকের জেলায় নিষিদ্ধ ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী)-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন ‘দণ্ডকারণ্য স্পেশাল জোনাল কমিটি’র (DKSZC) দুই সদস্য এবং ৩২ জন মহিলা ক্যাডার সহ ৫০ জন নকশালবাদী সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF) ক্যাম্পে আত্মসমর্পণ করেছে। এছাড়াও কোন্ডাগাঁও এক মহিলা ক্যাডার আত্মসমর্পণ করেছেন। যার মাথার দাম ছিল ৫ লক্ষ টাকা।
অস্ত্রত্যাগ করে সমাজের মূলস্রোতে ফেরার ঢল
জানা গিয়েছে, ডিকেএসজেডসির সদস্য রাজমান মান্ডাভি এবং রাজু সালামের নেতৃত্বে মাওবাদী ক্যাডারদের একটি দল কাঁকেরের কোয়লাইবেদা পুলিশ স্টেশনের অধীনে বিএসএফের ৪০তম ব্যাটালিয়নের কামতেরা ক্যাম্পে পৌঁছে আত্মসমর্পণ করে।
এক নিরাপত্তা আধিকারিক বলেন, “৩৯ টি অস্ত্রও সমর্পণ করেছে নকশাল বাহিনীর সদস্যরা। যার মধ্যে রয়েছে সাতটি AK-47 রাইফেল, দুটি সেলফ-লোডিং রাইফেল এবং চারটি INSAS রাইফেল, একটি INSAS LMG (লাইট মেশিনগান) এবং একটি স্টেন গান।” আত্মসমর্পণকারী ক্যাডারদের মধ্যে বিভাগীয় কমিটির পাঁচ সদস্য প্রসাদ তাদামি, হীরালাল কোমরা, জুগনু কাওয়াচি, নরসিংহ নেতাম এবং নন্দে (রাজমান মান্ডাভির স্ত্রী) অন্তর্ভুক্ত।
জানা গিয়েছে, অন্যদের মধ্যে ২১ জন এলাকা কমিটির সদস্য এবং ২১ জন দলীয় সদস্য রয়েছেন। সুকমায় আত্মসমর্পণকারী নকশালদের মধ্যে রয়েছে ওয়াম লক্ষ্মু (৫৩), যিনি পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি (পিএলজিএ) ব্যাটালিয়ন নং ১-এর সদস্য, যা মাওবাদীদের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক গঠন হিসেবে বিবেচিত হত। তার মাথার দাম ছিল উপর ১০ লক্ষ টাকা।
মাওবাদীদের গণ-আত্মসমর্পণের ঘটনায় এক্সে পোস্ট মুখ্যমন্ত্রীর
ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই এক্সে লেখেন, “দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ করা নকশালবাদ ভেঙে পড়েছে। গডচিরোলিতে কুখ্যাত মাওবাদী পলিটব্যুরো সদস্য মাল্লুজুলা ভেনুগোপাল রাও ওরফে সোনু সহ ৬০ জন নকশালবাদীর আত্মসমর্পণ নকশালবাদী মতাদর্শের উপর এক চূড়ান্ত আঘাত।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বীর নিরাপত্তা বাহিনী অদম্য সাহসের নিরন্তর নকশালবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন এবং জয় হাসিল করছেন”। ২০২৬-এর মার্চের মধ্যে অমিত শাহের নেতৃত্বে দেশ থেকে নকশালবাদ নির্মূল করার প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।