উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী প্রাক্তন বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডি (Vice President)। বিচারপতি থাকা কালীন তিনি ছত্তিশগড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নকশাল নিকেশ সংক্রান্ত মামলায় একটি বিতর্কিত রায় দিয়েছিলেন। যা সালওয়া জুড়ুম নামে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছিল। বর্তমানে এই নির্বাচন ঘিরে বিরোধীরা এই রায়কে ইস্যু করে সুদর্শন রেড্ডির সমালোচনা করছে। যা নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে।
তবে এই বিতর্ককে কেন্দ্র করে জনৈক আইনজীবী সুদর্শন রেড্ডিকে দিয়েছেন উপদেশ। রাজনীতির ময়দানে পা রাখলে গন্ডারের মতো মোটা চামড়া থাকা প্রয়োজন—এমনই মন্তব্য করেছেন ল’ কমিশনের সদস্য এবং বিশিষ্ট আইনজীবী হিতেশ জৈন। সম্প্রতি সালওয়া জুড়ুম রায় নিয়ে সমালোচনার প্রেক্ষিতে বিচারপতি সুদর্শন রেড্ডির বিরুদ্ধে তাঁর এই মন্তব্য রাজনৈতিক এবং আইনি মহলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
হিতেশ জৈন অভিযোগ করেছেন যে, বিচারপতি সুদর্শন রেড্ডি বর্তমানে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন এবং তিনি উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী। তাঁর মতে, রাজনীতির ময়দানে নামলে সমালোচনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে এবং বিচারপতির রায়ের সমালোচনা থেকে বিরত থাকার দাবি করা যায় না।
হিতেশ জৈন আরও উল্লেখ করেছেন একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর কথা, যার মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি মদন লোকুর, বিচারপতি এস. মুরলীধর, বিচারপতি সঞ্জীব ব্যানার্জি এবং বিচারপতি অভয় ওকা।
তিনি দাবি করেছেন, এই বিচারপতিদের মধ্যে একটি সাধারণ উদ্দেশ্য রয়েছে, যা হলো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে সমালোচনা করা এবং তাঁর সরকারের নীতির বিরোধিতা করা। এই মন্তব্য রাজনৈতিক এবং বিচার বিভাগীয় ক্ষেত্রে নতুন বিতর্কের সূচনা করেছে।জৈনের মতে, “যখন কেউ রাজনীতির ময়দানে প্রবেশ করেন, তখন তাঁকে সমালোচনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
বিচারপতি হিসেবে দেওয়া রায় সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। রাজনীতিতে এলে গন্ডারের মতো মোটা চামড়া থাকা দরকার।” তিনি আরও বলেছেন, সালওয়া জুদুম মামলার রায় নিয়ে সমালোচনা হওয়া স্বাভাবিক, কারণ এটি একটি সংবেদনশীল বিষয় ছিল। সালওয়া জুড়ুম ছিল ছত্তিশগড়ে নকশালবাদের বিরুদ্ধে একটি বিতর্কিত অভিযান, যা সুপ্রিম কোর্ট অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছিল।
এই রায়ের পর বিচারপতি সুদর্শন রেড্ডি ব্যাপক আলোচনায় এসেছিলেন।এই ঘটনা প্রেক্ষিতে, বিচার বিভাগ এবং রাজনীতির মধ্যে সীমারেখা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। বিচারপতিদের রাজনীতিতে যোগদান এবং তাঁদের রায়ের সমালোচনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। হিতেশ জৈনের মন্তব্যের পর বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস, তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই অভিযানকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছিল, যা ছত্তিশগড়ের বিজেপি সরকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল। এই রায়ের পর থেকেই বিচারপতি সুদর্শন রেড্ডি একাধিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। তাঁর উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত এই বিতর্ককে আরও তীব্র করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনা বিচার বিভাগ এবং রাজনীতির মধ্যে সম্পর্কের সংবেদনশীলতাকে তুলে ধরেছে। বিচারপতিদের রাজনৈতিক ভূমিকা গ্রহণ এবং তাঁদের রায়ের সমালোচনা ভবিষ্যতে আরও জটিল আইনি ও রাজনৈতিক প্রশ্ন তুলতে পারে।
বিষ্ণু-ডেভিডদের উপর ভরসা রেখে গ্ৰুপের শেষ ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের
এই পরিস্থিতিতে, জনগণের মধ্যেও বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। হিতেশ জৈনের এই মন্তব্যের পর আইনি এবং রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে।