কানাডার ব্র্যাম্পটন শহরে ফের দাপট দেখাল লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং। ১৬ অক্টোবর সকালেই জনপ্রিয় কমেডিয়ান কাপিল শর্মার মালিকানাধীন ক্যাফে ‘জমিন্দার বার অ্যান্ড গ্রিল’-এ চলল অঝোরে গুলি। দিন পেরোতেই সন্ধ্যায় আর এক ব্যবসায়ীর কোঠিতে হামলা হয়।
এই দুই ঘটনাতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় ভারতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে। সবচেয়ে বড় কথা, দু’টি হামলারই দায় স্বীকার করেছে কুখ্যাত গ্যাংস্টার গোল্ডি ঢিলোঁ, যিনি নিজেকে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য বলে দাবি করেছেন।
ঝাড়ু কিনলেই অর্থলাভ? ধনতেরাসের দিনে কী বলছে পুরাণ
গোল্ডি ঢিলোঁ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লিখেছে, “সত্ শ্রী আকাল… আমি গোল্ডি ঢিলোঁ, লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং থেকে। ব্র্যাম্পটনের ২৯৫ কুইন স্ট্রিট ই-তে ‘জমিন্দার বার অ্যান্ড গ্রিল’-এ যে গুলি চালানো হয়েছে, তার দায়িত্ব আমি নিচ্ছি। এর সঙ্গে কোনও অর্থনৈতিক লেনদেনের ঝামেলা ছিল না, শুধু একটু বুদ্ধি শেখানো দরকার ছিল। এটা কেবল ট্রেলার, যদি বোঝে না, তাহলে সিনেমায় তার প্রাণও যেতে পারে।”
এই পোস্ট ভাইরাল হতেই কানাডার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলে একাধিক গুলি চালানো হয়, যদিও কেউ আহত হননি। স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত তদন্ত শুরু করেছে এবং এলাকা জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এই গ্যাংস্টার গোল্ডি ঢিলোঁ আগেও কাপিল শর্মার ক্যাফেতে হামলার দায় স্বীকার করেছিলেন। তখনও কানাডা পুলিশ কড়া তদন্ত চালিয়েছিল, কিন্তু কেউ ধরা পড়েনি। এবার ফের একই ধরণের হামলা ঘটায় আতঙ্ক আরও বেড়েছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কানাডা সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংকে “জঙ্গি সংগঠন” হিসেবে ঘোষণা করেছে। তারপর থেকেই এই গ্যাং একের পর এক এলাকায় দাপট দেখাচ্ছে বিশেষত যেখানে ভারতীয় ব্যবসায়ী বা পরিচিত মুখ রয়েছেন। স্থানীয় ভারতীয় কমিউনিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা এখন ভয় আর উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ বলেছেন, “আমরা আমাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছি। এই হামলা শুধুই হুমকি নয়, এটা একটা বড় বার্তা।”
কানাডার পুলিশ জানিয়েছে, তারা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে, কারণ লরেন্স বিষ্ণোই ভারতেরই এক কুখ্যাত অপরাধ জগতের নাম, যিনি বর্তমানে ভারতের জেলে বন্দি আছেন কিন্তু তাঁর নেটওয়ার্ক ভারত ও কানাডা দুই দেশেই সক্রিয়। এই হামলার পর থেকে ব্র্যাম্পটনের রাস্তায় টহলদারি বাড়ানো হয়েছে।
ভারতীয় দূতাবাসও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে এবং ভারতীয় নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলেছে। এমন সময় যখন কানাডা-ভারত সম্পর্ক নিয়েও টানাপোড়েন চলছে, তখন এই হামলা দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।