ইসলামাবাদ: বিশ্বব্যাপী ত্রাস সৃষ্টি করা জঙ্গি সংগঠন লস্কর ই তৈবা। রাজধানী ইসলামাবাদে এবার তাদের নয়া IT সেল ভারতের রাডারে। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে লস্কর-ই-তৈবা (এলইটি) নামক জঙ্গি সংগঠনের নতুন আইটি সেলের স্থাপনা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তীক্ষ্ণ নজরে পড়েছে। এই সেলে প্রায় ৮০টি কম্পিউটারের ক্ষমতা রয়েছে, যা মূলত জঙ্গি প্রচারণা এবং অনলাইন র্যাডিক্যালাইজেশনের জন্য ব্যবহৃত হবে।
একটি লিক হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এটি একটি সম্পূর্ণ মিডিয়া ল্যাবের মতো—প্রফেশনাল এডিটিং সফটওয়্যার, হেডফোন, ওয়ার্কস্টেশন সহ সবকিছু। এই ঘটনা শুধু ভারত নয়, বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বাড়িয়েছে, কারণ এটি আধুনিক টেকনোলজির সাহায্যে সন্ত্রাসের ছড়িয়ে পড়ার নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
রামমন্দিরে ধর্মধ্বজা তুললেন প্রধানমন্ত্রী, পূর্ণতা পেল শতাব্দীর অপেক্ষা
পাকিস্তানের রাজধানীর হৃদয়ে এমন একটি সেটআপ চলছে, যা স্পষ্ট করে দেয় যে, জঙ্গি গ্রুপগুলো দেশের রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার ছায়ায় কাজ করছে। অবশ্য এই ছবি নতুন নয় ভারতের অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের পরে খোদ পাকিস্তানী সেনাদের নামাজ পড়তে দেখা যায় মৃত শহীদদের শেষকৃত্যে।
লস্কর-ই-তৈবা, যা ১৯৮৭ সালে পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য পরিচিত। এর প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাইদ এখনো পাকিস্তানে নির্মম স্বাধীনতায় ঘুরে বেড়ান, যদিও আমেরিকা ও রাষ্ট্রসংঘ তাকে জঙ্গি হিসেবে ঘোষণা করেছে। সংগঠনটির মারকাটে তৈবা ক্যাম্প মুরিদকে-তে অবস্থিত, যা ২০০ একর জুড়ে বিস্তৃত। কিন্তু এবার ইসলামাবাদে এই আইটি সেলটি একটা নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
এক্স (পূর্বের টুইটার)-এ প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, কম্পিউটারের সারি, এডিটররা ব্যস্ত, এবং সবকিছু জিহাদি প্রচারের জন্য প্রস্তুত। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি সম্ভাব্য সহানুভূতিসম্পন্নদের অনলাইনে র্যাডিক্যালাইজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে—সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, টিকটকের মাধ্যমে ভিডিও, মিম এবং ফেক নিউজ ছড়ানো। একজন নাম গোপন রাখার শর্তে ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তা বললেন, “এটি কোনো গুপ্তচর্বৃত্তি নয়, খোলাখুলি চ্যালেঞ্জ। আমরা এর ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট ট্র্যাক করছি।”
ই সেলের উদ্দেশ্য স্পষ্ট: প্রচার এবং নিয়োগ। লস্করের মতো গ্রুপগুলো ঐতিহ্যগতভাবে অফলাইন ট্রেনিং ক্যাম্প চালায়, কিন্তু ডিজিটাল যুগে তারা অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। গত কয়েক বছরে, জম্মু-কাশ্মীরে তাদের প্রক্সি গ্রুপ দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) টিকটক এবং ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করে যুবকদের প্ররোচিত করেছে। এই নতুন সেলটি সেই প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করবে।
পাকিস্তানের মুরিদকে ক্যাম্প ধ্বংসের পরও লস্করের কমান্ডার কাসিমের ভিডিওতে দেখা গেছে, তারা আরও বড় করে পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইসলামাবাদে এই আইটি সেলটি সেই ধারাবাহিকতার অংশ। এক্স-এ পোস্ট করা ভিডিওতে ব্যবহারকারী অ্যানুপমা জম্মওয়াল লিখেছেন, “রাজধানীতে জঙ্গি গ্রুপের ডিজিটাল স্টুডিও এটি রাষ্ট্রীয় স্পনসরশিপের প্রমাণ।” অন্য এক পোস্টে বলা হয়েছে, “পাকিস্তানের রাজধানীতে গুহায় লুকিয়ে নয়, খোলাখুলি এই সেটআপ চলছে।”
