‘একজোট হয়ে চোরেদের তাড়ান’ মঞ্চ থেকে দাবি লালুর

রবিবার, বিহারের সাসারামে মহাগঠবন্ধনের ‘ভোটাধিকার যাত্রা’-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) প্রধান লালু প্রসাদ (Lalu-prasad) যাদব তীব্র ভাষায় বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তিনি মঞ্চ…

Lalu Prasad yadav

রবিবার, বিহারের সাসারামে মহাগঠবন্ধনের ‘ভোটাধিকার যাত্রা’-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) প্রধান লালু প্রসাদ (Lalu-prasad) যাদব তীব্র ভাষায় বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তিনি মঞ্চ থেকে জনতার উদ্দেশে বলেন, “চোরো কো হাটাইয়ে, বিজেপি কো ভাগাইয়ে, আর হামে জিতাইয়ে।

যে কোনো মূল্যে বিজেপিকে ক্ষমতায় আসতে দেবেন না, যারা চোর এবং গণতন্ত্রের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। রাহুল গান্ধী, তেজস্বী যাদব, মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং আপনারা সবাই একজোট হয়ে এই লড়াইয়ে জয়ী হবেন।” এই যাত্রায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে এবং মহাগঠবন্ধনের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

   

এই যাত্রার উদ্দেশ্য হল ভোটারদের অধিকার রক্ষা করা এবং নির্বাচনী তালিকা থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করা।লালু প্রসাদ যাদব বলেন, “বিহার হল গণতন্ত্রের জননী। এই মাটিতে গণতন্ত্রের ধ্বংসের চেষ্টা বিজেপি করছে। আমরা এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেব। বিজেপি জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিচ্ছে, নির্বাচন কমিশনকে তাদের হাতের পুতুল বানিয়েছে।

আমরা একজোট হয়ে এই চোরেদের তাড়াব।” তিনি এই যাত্রার সবুজ পতাকা উত্তোলন করে এর শুভারম্ভ করেন এবং জনগণকে গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।‘ভোটাধিকার যাত্রা’ সাসারাম থেকে শুরু হয়ে গয়া, মুঙ্গের, ভাগলপুর, কাটিহার, পূর্ণিয়া, মধুবনী, দ্বারভাঙা, পশ্চিম চম্পারণ এবং আরা হয়ে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।

এরপর ১ সেপ্টেম্বর পাটনায় একটি বিশাল ‘ভোটাধিকার সমাবেশ’-এর মাধ্যমে এই যাত্রা সমাপ্ত হবে। তেজস্বী যাদব বলেন, “বিজেপি ভোটার তালিকা থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। আমরা সুপ্রিম কোর্ট থেকে নির্দেশ পেয়েছি যে নির্বাচন কমিশনকে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার কারণ জানাতে হবে।

এটি আমাদের লড়াইয়ের প্রথম জয়।”রাহুল গান্ধী এই অনুষ্ঠানে বলেন, “এটি কেবল ভোটাধিকারের লড়াই নয়, এটি সংবিধান ও গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই। বিজেপি সংবিধানকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে, কিন্তু আমরা তাদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়ব।” তিনি বিহারের জনগণকে আহ্বান জানান, “আপনারা ভোটাধিকার রক্ষার জন্য রাস্তায় নেমে এসেছেন, এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

আমরা একসঙ্গে এই লড়াই জিতব।”মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, “বিজেপি গণতন্ত্রের নামে প্রতারণা করছে। তারা নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে ভোটারদের নাম বাদ দিয়ে বিরোধীদের দুর্বল করতে চাইছে। কিন্তু বিহারের জনগণ তাদের এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেবে।” তিনি মহাগঠবন্ধনের ঐক্যের উপর জোর দিয়ে বলেন, “আমরা একসঙ্গে লড়ব এবং জনগণের কণ্ঠস্বরকে দমিয়ে রাখার চেষ্টাকে ব্যর্থ করব।”

Advertisements

লালু প্রসাদ যাদব আরও বলেন, “আমরা জনগণের জন্য লড়েছি, জনগণের অধিকারের জন্য জেল খেটেছি। আমাদের ইতিহাস গণতন্ত্র রক্ষার ইতিহাস। বিজেপি যতই চেষ্টা করুক, তারা আমাদের ভাঙতে পারবে না।” তিনি বিহারের জনগণকে আহ্বান জানান, “আপনারা প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি মোড়ে গিয়ে বলুন যে বিজেপি গণতন্ত্রের শত্রু।

আমরা তাদের তাড়িয়ে দেব।”এই যাত্রা বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মহাগঠবন্ধন এই যাত্রার মাধ্যমে জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে এবং বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র বিরুদ্ধে জনমত গঠন করতে চাইছে। তেজস্বী যাদব বলেন, “এই যাত্রা বিহারের প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছাবে।

আমরা জনগণকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করব এবং বিজেপির মিথ্যা প্রচারের বিরুদ্ধে লড়ব।”নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করে বলেছে যে ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ এবং সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে করা হয়েছে।

চোখ রাঙাচ্ছে ডার্বি, মরসুমের প্রথম বড় পরীক্ষায় কে হাসবে শেষ হাসি?

তবে, মহাগঠবন্ধনের নেতারা এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন যে কমিশন বিজেপির নির্দেশে কাজ করছে। এই যাত্রা বিহারের রাজনৈতিক ময়দানে একটি নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং আগামী নির্বাচনকে আরও তীব্র করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।