লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সহযোগী লখবিন্দর কুমার দেশে ফিরতেই গ্রেপ্তার

Lakhvinder Kumar deported US Lawrence Bishnoi gang CBI

নয়াদিল্লি, ২৫ অক্টোবর: ভারতের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির জন্য এক বড় সাফল্য। অবশেষে আমেরিকা থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হল কুখ্যাত গ্যাংস্টার লখবিন্দর কুমারকে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে হরিয়ানা পুলিশের ওয়ান্টেড তালিকায় ছিলেন। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা CBI, বিদেশ মন্ত্রক (MEA) এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (MHA)-এর সমন্বয়ে এই অভিযানে সাফল্য এসেছে।

Advertisements

কে এই লখবিন্দর কুমার?

লখবিন্দর কুমার ছিলেন ভারতের সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধী চক্রের একটি নাম—লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং-এর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। হরিয়ানা পুলিশ তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় ওয়ারেন্ট জারি করেছিল। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে—

  • তোলাবাজি (Extortion)

  • ভয় দেখানো ও হুমকি (Intimidation)

  • অবৈধ অস্ত্র রাখার ও ব্যবহার

  • খুনের চেষ্টা (Attempt to Murder)

এই কারণে দীর্ঘদিন ধরেই তাকে ভারতের বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা খুঁজছিল।

ইন্টারপোল রেড নোটিস

২০২৪ সালের ২৬ অক্টোবর, হরিয়ানা পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে CBI ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করায় লখবিন্দর কুমারের খোঁজ মিলতে শুরু করে। রেড নোটিস আন্তর্জাতিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে দেয় যে একজন অপরাধীকে খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করতে হবে।

এই নোটিসের পর থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তার গতিবিধি নজরে আসে।

আমেরিকা থেকে দেশে প্রত্যাবর্তন

দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর অবশেষে ২৫ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে মার্কিন কর্তৃপক্ষ লখবিন্দরকে ভারতে ফেরত পাঠায়। দিল্লি বিমানবন্দরে নামতেই তাকে গ্রেপ্তার করে হরিয়ানা পুলিশের একটি বিশেষ দল। এখন তাকে দিল্লি থেকে সরাসরি হরিয়ানায় নিয়ে যাওয়া হবে, যেখানে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন।

Advertisements

সিবিআই-এর ভূমিকা

CBI হলো ইন্টারপোলের জন্য ভারতের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (NCB)। ইন্টারপোলের মাধ্যমে বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে CBI। ভারতের অভ্যন্তরে এই সমন্বয়ের কাজ হয় BHARATPOL নামক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে।

CBI জানিয়েছে, গত কয়েক বছরে ইন্টারপোলের সহযোগিতায় ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১৩০-রও বেশি পলাতক অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে বার্তা

লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং বিগত কয়েক বছরে দেশজুড়ে চাঁদাবাজি, সুপারস্টারদের হুমকি এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে নাম জড়িয়েছে। লখবিন্দর কুমারের প্রত্যাবর্তন ও গ্রেপ্তার এই গ্যাংয়ের জন্য বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।

একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন,

“লখবিন্দরের গ্রেপ্তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রতীক। দেশের বাইরে পালিয়েও অপরাধীরা নিরাপদ নয়, একদিন না একদিন তাদের আইনের আওতায় আসতেই হবে।”

লখবিন্দর কুমারের প্রত্যাবর্তন ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য বড় সাফল্য এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার একটি স্পষ্ট উদাহরণ। এটি প্রমাণ করে, অপরাধীরা যতই বিদেশে পালাক না কেন, ইন্টারপোল ও আন্তঃদেশীয় সমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের শেষ পর্যন্ত আইনের মুখোমুখি হতে হবে। ভারতের পক্ষ থেকে এটি সংগঠিত অপরাধচক্র ও গ্যাংস্টার রাজের বিরুদ্ধে শক্ত বার্তা।