পৃথক প্রশাসন না হলে সড়কও মুক্ত হবে না, ফের বিক্ষোভে কুকিরা, নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ

ইম্ফল: মণিপুরে কুকি উপজাতির বিক্ষোভের মধ্যেই আজ থেকে ফের জেলা জুড়ে বেসামরিক বাস চলাচল শুরু হয়েছে। কুকি সম্প্রদায়ের সদস্যরা পৃথক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গঠনের দাবিতে দীর্ঘদিন…

short-samachar

ইম্ফল: মণিপুরে কুকি উপজাতির বিক্ষোভের মধ্যেই আজ থেকে ফের জেলা জুড়ে বেসামরিক বাস চলাচল শুরু হয়েছে। কুকি সম্প্রদায়ের সদস্যরা পৃথক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গঠনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই বিক্ষোভ করছে৷ তাদের দাবি পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তারা মুক্তভাবে চলাচল করতে দিতে নারাজ৷ ৮ মার্চ থেকে মণিপুরের কুকি অধ্যুষিত এলাকাগুলির উপর দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়ক সম্পূর্ণ অবরোধমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

   

আজ, শনিবার সকালে, কাংপোকপী জেলার বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর মাইন-প্রতিরোধী যানবাহন চলাচল শুরু করেছে৷ রাজ্য রাজধানী ইম্ফল থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কাংপোকপী। এখানে বেশ কিছু মহিলা একত্রিত হয়ে হাইওয়ে অবরোধের চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর লাঠিচার্জের মুখে পড়েন৷ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর মিলেছে।

কেন্দ্রের নতুন নির্দেশনা
কেন্দ্রীয় সরকার আজ একটি নতুন নির্দেশনা জারি করেছে, যেখানে বলা হয়েছে মণিপুরের কোনো জায়গাতেই রাস্তা অবরোধ করা যাবে না। উত্তরপূর্বের এই রাজ্যে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি এবং মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ পদত্যাগ করার পরই এই নির্দেশ দেওয়া হয়৷ 

বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ
মণিপুরের কুকি-প্রধান এলাকাগুলিতে একাধিক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা জানান, বিক্ষোভকারীরা যানবাহন লক্ষ্য করে তাতে ইট-পাথর ছুঁড়তে থাকে৷ রাস্তাঘাট খুঁড়ে, টায়ার পুড়িয়ে, ব্যারিকেড তৈরি করা হয় কোথাও কোথাও। কিছু বিক্ষোভকারী নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে  গালিগালাজ করেছেন বলেও জানা গিয়েছে।

কুকি সম্প্রদায়ের দাবি
কুকি নেতারা, যারা বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি, তাদের জন্য একটি পৃথক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গঠন করতে হবে। তারা বলছেন, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা মণিপুরের বিভিন্ন অংশে অবাধে চলাচল করতে পারবেন না।

মৈতৈদের আপত্তি
এদিকে, মৈতৈ সম্প্রদায়ের সংগঠনগুলো প্রশ্ন তুলেছে, কেন কুকি উপজাতির মানুষরা তাদের গ্রামে ফিরে গিয়ে পুনর্গঠন করতে পারছেন না৷ তারা ত্রাণ শিবিরে বসবাস করছেন। তারা বলছেন, কুকি গোষ্ঠীগুলি সংঘর্ষকে উপযুক্ত করে তাদের দাবি আরো বাড়াচ্ছে, তবে আলোচনা চললে পরিস্থিতি শান্ত হতে পারে।

দীর্ঘদিনের দাবি
বিশ্ব কুকি-জো ইন্টেলেকচুয়াল কাউন্সিল (WKZIC) জানুয়ারিতে মণিপুরের নতুন গভর্নরের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেয়, যেখানে তারা দাবি করেছে যে কুকি গোষ্ঠী ১৯৪৬-৪৭ সাল থেকে আলাদা রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। তারা দীর্ঘ সময় ধরে মণিপুর থেকে একটি আলাদা অঞ্চল বা ইউনিয়ন টেরিটরি গঠনের জন্য চেষ্টা করছে।