MARCOS Commando training process: ভারতীয় সেনার কিছু বিশেষ বাহিনী আছে যাদের প্রশিক্ষণ এত কঠিন এবং বিপজ্জনক যে একজন সাধারণ মানুষ তা কল্পনাও করতে পারে না। এরা হলেন সেই সাহসী সৈন্য যারা শত্রুর সামনে দেশের প্রতিরক্ষার শেষ প্রাচীর হিসেবে বিবেচিত। তাদের প্রশিক্ষণের প্রতিটি মুহূর্ত তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে এমন এক সীমায় ঠেলে দেয়, যেখান থেকে তারা যেকোনো মিশন সম্পাদন করতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক ভারতীয় নৌবাহিনীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিশেষ বাহিনী, মার্কোস কমান্ডোদের রোমাঞ্চকর প্রশিক্ষণ সম্পর্কে।
প্রশিক্ষণের প্রথম ধাপ
মার্কোস কমান্ডো হওয়ার পথ অত্যন্ত কঠিন, এবং এটি বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন প্রশিক্ষণগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। শুরু থেকেই, প্রার্থীদের কঠোর শারীরিক এবং মানসিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। নৌবাহিনীর কর্মীরা নিজেরাই মার্কোস হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। কিন্তু তাদের প্রশিক্ষণ এতটাই কঠিন যে প্রাথমিক পর্যায়ে হাজার হাজারের মধ্যে মাত্র কয়েকজনকে নির্বাচিত করা হয় এবং বেশিরভাগ প্রার্থীই এখান থেকে বাদ পড়েন।
‘চোক অ্যান্ড ডাঙ্ক’-এর ভয়াবহ প্রশিক্ষণ
মার্কোসের প্রশিক্ষণের সবচেয়ে ভয়াবহ অংশগুলির মধ্যে একটি হলো জলের সাথে সম্পর্কিত। এটি ‘চোক অ্যান্ড ডাঙ্ক’ প্রশিক্ষণ নামে পরিচিত। এতে কমান্ডোকে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে শ্বাস না নিয়ে জলের নিচে থাকতে হয়।
বেশ কয়েকদিন ধরে না ঘুমানোর প্রশিক্ষণ
শুধু তাই নয়, মার্কোস কমান্ডোদের ঘন্টার পর ঘন্টা গভীর এবং ঠান্ডা জলে সাঁতার কাটতে হয়। এছাড়াও, তাদের গভীর সমুদ্রে ডুব দিতে শেখানো হয় এবং শত্রু অঞ্চলে নীরবে জলের নিচে প্রবেশ করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাদের প্রশিক্ষণের মধ্যে রয়েছে ‘ঘুম বঞ্চনা’, যার অর্থ তারা বেশ কয়েক দিন ধরে ঘুম থেকে বঞ্চিত থাকে এবং মানসিক চাপ, যা তাদের যেকোনো পরিস্থিতিতে শান্ত থাকার এবং চিন্তা করার অনুশীলন করতে বাধ্য করে। এটি এতটাই ভীতিকর এবং কঠিন যে অনেক প্রার্থী এখানেও হাল ছেড়ে দেন।
চার দিকের শত্রুদের জন্য মৃত্যু। এই কমান্ডোরা কেবল জলে নয়, স্থলে এবং আকাশেও লড়াই করার জন্য প্রশিক্ষিত। তাদের সকল ধরণের অস্ত্র ব্যবহার শেখানো হয়, এবং স্নাইপার, ঘনিষ্ঠ যুদ্ধ, অন্তর্ঘাত এবং সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানে দক্ষ হতে শেখানো হয়। মার্কোস কমান্ডোদের উচ্চতা থেকে লাফ দেওয়ার ক্ষমতাও দেওয়া হয়, যাতে তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে শত্রুকে ধ্বংস করতে পারে।
এছাড়াও, মার্কোস কমান্ডোদের প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য হল তাদের কেবল সৈনিক নয় বরং প্রতিটি চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত যোদ্ধা হিসেবে গড়ে তোলা। এই প্রশিক্ষণ তাদের মানসিক ও শারীরিক স্তরে এতটাই শক্তিশালী করে যে তারা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক মিশনও সম্পাদন করতে সক্ষম হয়ে ওঠে।
