Palace on Wheels: যদি আপনি রাজকীয় জাঁকজমক এবং বিলাসিতা অনুভব করতে চান, তাহলে ভারতে এমন একটি ট্রেন আছে যা আপনাকে একটি চলমান প্রাসাদের মতো অনুভব করাবে। এটি কেবল একটি ভ্রমণ নয় বরং একটি বিলাসবহুল অভিজ্ঞতা যা খুব কম লোকই করতে পারে।
ভারতীয় রেলকে সাধারণত সাধারণ মানুষের যাত্রা বলা হয়, যেখানে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ কম ভাড়ায় তাদের গন্তব্যে পৌঁছায়। কিন্তু আমাদের দেশে এমন কিছু ট্রেন আছে, যার ভাড়া শুনলে আপনার চোখ ধাঁধানো হয়ে যাবে। এই ভাড়া এত বেশি যে একজন সাধারণ মানুষ তার সারা জীবনে সেই ট্রেনে ভ্রমণ করার কথা কল্পনাও করতে পারে না।
যদিও ভারতীয় রেলওয়ে তার সস্তা ভাড়ার জন্য পরিচিত, তবুও কিছু ট্রেন আছে যাদের ভাড়া কল্পনারও বাইরে। আমরা যে ট্রেনটির কথা বলছি তা হল প্যালেস অন হুইলস। এই ট্রেনটি তার বিলাসবহুল অভিজ্ঞতা এবং রাজকীয় জাঁকজমকের জন্য বিখ্যাত, এবং এর ভাড়া নিজেই এটিকে ভারতের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ট্রেনগুলির মধ্যে একটি করে তোলে।
এই ট্রেনটি ৭ দিন ৮ রাতের একটি চমৎকার ভ্রমণের সুযোগ করে দেয়। এই পুরো যাত্রার টিকিটের দাম ১২ লক্ষ টাকা থেকে শুরু হয় এবং প্রায় ৩৯ লক্ষ টাকা বা তার বেশি হতে পারে। এই দাম আপনার বেছে নেওয়া কেবিনের উপর নির্ভর করে যেমন ডিলাক্স, সুপার ডিলাক্স বা প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট এবং ভ্রমণের মরসুম।
প্যালেস অন হুইলসের যাত্রা নয়া দিল্লি থেকে শুরু হয় এবং রাজস্থানের প্রধান রাজকীয় শহরগুলির মধ্য দিয়ে যায়। এর রুট সাধারণত নয়া দিল্লি – জয়পুর – সওয়াই মাধোপুর – চিত্তৌরগড় – উদয়পুর – জয়সলমের – যোধপুর – ভরতপুর – আগ্রা – নয়া দিল্লি। এটি ভ্রমণকারীদের রাজস্থানের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
এই ট্রেনটি কেবল ভাড়ার দিক থেকে নয়, সুযোগ-সুবিধার দিক থেকেও রাজকীয়। এতে এয়ার কন্ডিশনিং, সংযুক্ত বাথরুম সহ বিলাসবহুল কেবিন, এক বা দুটি রেস্তোরাঁ, একটি বার লাউঞ্জ এবং একটি স্পার মতো সুবিধা রয়েছে। প্রতিটি কেবিন রাজকীয় স্টাইলে সজ্জিত, যা যাত্রীদের রাজা-মহারাজার মতো অভিজ্ঞতা দেয়।
প্যালেস অন হুইলস যৌথভাবে ভারতীয় রেলওয়ে এবং রাজস্থান পর্যটন উন্নয়ন কর্পোরেশন (RTDC) দ্বারা চালু করা হয়েছিল। এটি প্রথম পরিচালিত হয়েছিল ২৬ জানুয়ারি ১৯৮২ সালে। এটি ছিল ভারতের প্রথম বিলাসবহুল পর্যটন ট্রেন, বিশেষভাবে বিদেশী পর্যটক এবং রাজকীয় অভিজ্ঞতা অর্জনকারী যাত্রীদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল।
এই ট্রেনটি কেবল পরিবহনের মাধ্যম নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক পরিচয়। এটি তাদের জন্য যারা ভারতের রাজকীয় অতীতকে কাছ থেকে অনুভব করতে চান এবং এর জন্য বড় মূল্য দিতে প্রস্তুত।