HomeBharatPetrol Diesel Price Hike: মোদী সরকারের জ্বালানি নীতির বিরুদ্ধে খড়গের তীব্র প্রতিবাদ

Petrol Diesel Price Hike: মোদী সরকারের জ্বালানি নীতির বিরুদ্ধে খড়গের তীব্র প্রতিবাদ

- Advertisement -

Petrol Diesel Price Hike: কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গে সোমবার মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, অপরিশোধিত তেলের দাম কমলেও সেই সুবিধা জনগণের কাছে পৌঁছানো হচ্ছে না। খড়গে বলেন, বিজেপি সরকার জনগণের কাছ থেকে “মুক্তিপণ” আদায় করছে এবং মোদী সরকার “নির্ভয়ে জনগণকে লুটছে”। তিনি এই মন্তব্য একটি সংবাদ প্রতিবেদনের উল্লেখ করে করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে যে অপরিশোধিত তেলের দাম গত ৪২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে।

খড়গে সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ হিন্দিতে একটি পোস্টে বলেন, “অপরিশোধিত তেলের দাম ক্রমাগত কমছে, কিন্তু পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমানো হচ্ছে না… মোদী সরকার নির্ভয়ে জনগণকে লুটছে!” তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “বিজেপি আর কতদিন জনগণের কাছ থেকে এভাবে মুক্তিপণ আদায় করবে?” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের জ্বালানি নীতির সমালোচনা করেছেন এবং জনগণের উপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপানোর অভিযোগ তুলেছেন।

   

অপরিশোধিত তেলের দাম কমলেও জ্বালানির দাম অপরিবর্তিত
সাম্প্রতিক একটি সংবাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম গত ৪২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে নেমেছে। ২০২১ সালের পর থেকে তেলের দামে এই উল্লেখযোগ্য হ্রাস দেখা গেছে, যা ভারতের মতো তেল আমদানিকারক দেশের জন্য সুবিধার কথা। কিন্তু খড়গের অভিযোগ, এই সুবিধা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর পরিবর্তে সরকার তা নিজের কোষাগারে জমা করছে। ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম এখনও ২০২২ সালের মে মাসে নির্ধারিত মূল্যে অপরিবর্তিত রয়েছে, যখন দিল্লিতে পেট্রোলের দাম লিটারে ৯৬.৭২ টাকা এবং ডিজেলের দাম ৮৯.৬২ টাকা ছিল।

খড়গে দাবি করেছেন, তেলের দাম কমার সুবিধা জনগণকে দেওয়ার পরিবর্তে সরকার জ্বালানির উপর উচ্চ কর বজায় রেখে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করছে। তিনি বলেন, “এটি জনগণের প্রতি প্রতারণা। যখন তেলের দাম কমে, তখন পেট্রোল-ডিজেলের দামও কমানো উচিত। কিন্তু মোদী সরকার তা না করে জনগণের পকেট থেকে টাকা লুটছে।”

জ্বালানি দাম নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক
খড়গের এই মন্তব্য জ্বালানি দাম নিয়ে ভারতের রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে মোদী সরকার জ্বালানির উপর উচ্চ এক্সাইজ ডিউটি এবং ভ্যাট আরোপ করে জনগণের উপর অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়েছে। ২০২১ সালে যখন অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল, তখন সরকার দুই দফায় এক্সাইজ ডিউটি কমিয়েছিল। কিন্তু এখন তেলের দাম কমলেও সেই সুবিধা জনগণের কাছে পৌঁছানো হচ্ছে না।

বিরোধী দলগুলি দাবি করছে, সরকার গত কয়েক বছরে জ্বালানি থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জ্বালানি কর থেকে সরকার প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা আয় করেছে। খড়গে বলেন, “এই টাকা জনগণের পকেট থেকে এসেছে। বিজেপি এই লুটপাট বন্ধ না করলে জনগণ তাদের জবাব দেবে।”

জনগণের ক্ষোভ
জ্বালানির উচ্চ দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ বাড়ছে। দিল্লির একজন ট্যাক্সি চালক বলেন, “তেলের দাম কমছে শুনি, কিন্তু পাম্পে গেলে দাম একই থাকে। আমাদের আয় কমে যাচ্ছে, খরচ বাড়ছে।” কলকাতার এক গৃহিণী বলেন, “পেট্রোল-ডিজেলের দাম না কমলে জিনিসপত্রের দামও কমবে না। সরকার আমাদের কথা ভাবছে না।”

সামাজিক মাধ্যমে খড়গের পোস্টের পর অনেকে তার সমর্থনে সরব হয়েছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “মোদী সরকার জনগণের জন্য কিছু করে না, শুধু লুট করে। খড়গে ঠিক বলেছেন।” তবে, বিজেপি সমর্থকরা পাল্টা দাবি করেছেন যে সরকার জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রেখে অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছে।

সরকারের নীরবতা
খড়গের এই সমালোচনার পরও কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপির পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে, অতীতে সরকার দাবি করেছে যে জ্বালানির উপর থেকে আয় করা টাকা জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে ব্যয় করা হচ্ছে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী গত বছর বলেছিলেন, “আমরা জ্বালানির দাম বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করি এবং জনগণের সুবিধার জন্য কাজ করছি।”

রাজনৈতিক প্রভাব
খড়গের এই মন্তব্য আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে জ্বালানি দামকে একটি বড় রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করতে পারে। কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি মূল্যবৃদ্ধি এবং জনগণের উপর অর্থনৈতিক চাপকে বিজেপির বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। খড়গের এই আক্রমণ কংগ্রেসের জনগণের কাছে পৌঁছানোর একটি কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।

মল্লিকার্জুন খড়গের এই সমালোচনা মোদী সরকারের জ্বালানি নীতির দুর্বলতাকে তুলে ধরেছে। অপরিশোধিত তেলের দাম কমলেও পেট্রোল-ডিজেলের দাম না কমানো জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়াচ্ছে। খড়গে এই ইস্যুকে “লুট” হিসেবে চিহ্নিত করে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। এই বিতর্ক কীভাবে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মঞ্চে প্রভাব ফেলে, তা আগামী দিনে স্পষ্ট হবে। তবে, এটি স্পষ্ট যে জ্বালানির দাম এখন জনগণের জন্য একটি জ্বলন্ত প্রশ্ন হয়ে উঠেছে।

- Advertisement -
Rana Das
Rana Dashttps://kolkata24x7.in/
Rana Das pioneered Bengali digital journalism by launching eKolkata24.com in 2013, which later transformed into Kolkata24x7. He leads the editorial team with vast experience from Bartaman Patrika, Ekdin, ABP Ananda, Uttarbanga Sambad, and Kolkata TV, ensuring every report upholds accuracy, fairness, and neutrality.
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular