তিরুবনন্তপুরম, ২৩ অক্টোবর: সামাজিক উন্নয়নের ইতিহাসে নতুন মাইলফলক ছুঁতে চলেছে কেরল। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, আগামী ১ নভেম্বর কেরলকে ভারতের প্রথম ‘এক্সট্রিম পভার্টি-ফ্রি স্টেট’ বা চরম দারিদ্র্যমুক্ত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
কীভাবে সম্ভব হল এই সাফল্য?
কেরল দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের অন্যতম অগ্রণী রাজ্য সামাজিক সূচকে। উচ্চ সাক্ষরতার হার, জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং সামাজিক কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির কারণে রাজ্যটি দেশজুড়ে উদাহরণ তৈরি করেছে। এবার দারিদ্র্য নির্মূলের ক্ষেত্রেও কেরল নতুন মানদণ্ড স্থাপন করতে চলেছে।
সরকারের উদ্যোগ
‘Nava Kerala Mission’-এর আওতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষায় একাধিক প্রকল্প চালু হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলিকে আবাসন, বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য নিরাপত্তা এবং কর্মসংস্থানমূলক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষদের জন্য ডিজিটাল আইডেন্টিফিকেশন ও ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার (DBT) ব্যবস্থাও বড় ভূমিকা নিয়েছে।
কেরলের মডেল
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কেরলের মডেল দেখাচ্ছে কীভাবে অল্প সম্পদ নিয়েও পরিকল্পিত উন্নয়ন ও সামাজিক বিনিয়োগের মাধ্যমে দারিদ্র্য প্রায় নির্মূল করা যায়।
বিশ্বব্যাংক এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন রিপোর্টেও কেরলের সামাজিক উন্নয়নের সাফল্য প্রশংসিত হয়েছে।
জাতীয় প্রেক্ষাপট
ভারতে এখনো বহু রাজ্যে চরম দারিদ্র্য বড় সমস্যা। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার ঘাটতি, কর্মসংস্থানের অভাব এবং আঞ্চলিক বৈষম্য এর প্রধান কারণ। সেই তুলনায় কেরলের অর্জন ভারতের জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
১ নভেম্বরের তাৎপর্য
কেরল রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবসই ১ নভেম্বর। সেই দিনেই কেরলকে ভারতের প্রথম দারিদ্র্যমুক্ত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে। অনুষ্ঠানকে ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে প্রস্তুতি চলছে।
কেরলের এই উদ্যোগ প্রমাণ করছে যে দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা, কার্যকর সামাজিক নীতি এবং জনঅংশগ্রহণ মিললেই দারিদ্র্য নির্মূল করা সম্ভব। দেশের অন্যান্য রাজ্যের জন্যও এটি হতে পারে অনুসরণের মডেল।


