ভারতের মহাকাশ জগতে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিতে চলেছে। ডিআরডিও সূত্রের খবর, শীঘ্রই হালকা যুদ্ধ বিমান (LCA) তেজসে দেশীয় কাবেরী ইঞ্জিন পরীক্ষা করা হবে। এটিই প্রথমবারের মতো যখন ভারতের নিজস্ব তৈরি ইঞ্জিনটি কোনও বিমানে পরীক্ষা করা হবে।
সূত্রের খবর, তেজসে কাবেরী ইঞ্জিন পরীক্ষা করলে উন্নয়ন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে। এটি ডিআরডিও দলকে আত্মবিশ্বাসের চূড়ান্ত স্তর দেবে এবং প্রমাণ করবে যে ভারত নিজস্ব ইঞ্জিন তৈরি করেছে, যা সফলভাবে একটি যুদ্ধবিমানে ইনস্টল এবং পরীক্ষা করা যেতে পারে। এটি ভারতের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত হবে।
প্রকল্পটি নিয়ে সকল পক্ষ একসাথে কাজ করবে
এই প্রকল্পটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ডিআরডিও, হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (এইচএএল), ভারতীয় বিমান বাহিনী (আইএএফ) এবং বেসরকারি শিল্পের মধ্যে আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। এখন এই প্রকল্পে সকল পক্ষ একসাথে কাজ করবে। তেজসে ইঞ্জিন স্থাপনের কাজ দেখাশোনা করবে HAL, অন্যদিকে বিমান বাহিনী তাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলবে কিভাবে ইঞ্জিনটি অপারেশনাল প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারে।
এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
বর্তমানে, তেজসে মার্কিন জেনারেল ইলেকট্রিক F404 এবং F414 ইঞ্জিন লাগানো আছে। কাবেরী ইঞ্জিন সফলভাবে পরীক্ষা করা হলে, ভারতকে বিদেশী ইঞ্জিনের উপর নির্ভর করতে হবে না। এই পদক্ষেপ “মেক ইন ইন্ডিয়া” এবং “আত্মনির্ভর ভারত” এর উদ্যোগগুলিকেও শক্তিশালী করবে।
পরীক্ষা কেমন হবে?
- কাবেরী ইঞ্জিনের গ্রাউন্ড রান এবং উচ্চ উচ্চতার সিমুলেশনের মতো অনেক পরীক্ষা ইতিমধ্যেই করা হয়েছে। এখন এটি তেজসে ইনস্টল করা হবে।
- প্রাথমিক ফ্লাইটগুলি কম ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
- ইঞ্জিনটির স্থায়িত্ব, থ্রাস্ট এবং বিমান ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যের জন্য পরীক্ষা করা হবে।
- সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, আগামী ২৩ বছরের মধ্যে ইঞ্জিনটি কার্যকরী ব্যবহারের জন্য প্রত্যয়িত হতে পারে।
ভবিষ্যতের পথ খুলে দেবে
কাবেরী ইঞ্জিনের নকশা আধুনিক প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি। এতে উন্নত ধাতব এবং ডিজিটাল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে। এটি কেবল তেজসের জন্যই নয়, ভবিষ্যতের ড্রোন, হেলিকপ্টার এবং পরবর্তী প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের জন্যও ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে।
এই পরীক্ষা সফল হলে, ভারত কেবল স্বনির্ভরই হবে না বরং ভবিষ্যতে উন্নত ইঞ্জিন প্রযুক্তির রফতানিকারকও হয়ে উঠতে পারবে। এটি ভারতের প্রতিরক্ষা এবং মহাকাশ খাতে একটি ঐতিহাসিক অর্জন হবে।