কর্ণাটক (Karnataka) রাজনীতিতে একবারে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে। ডেপুটি চিফ মিনিস্টার ডি.কে. শিবকুমারের শিবিরের এমএলএরা দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খার্গের সঙ্গে বৈঠক করেছে, যাতে নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবিতে চাপ দেওয়া যায়। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া তার অফিসিয়াল সফর বাতিল করে বেঙ্গালুরুর উদ্দেশ্যে ফিরে আসেন, যেখানে তার সমর্থকরাও বিভিন্ন বৈঠক করছেন।
শিবকুমার ফ্র্যাকশন এবং সিদ্দারামাইয়া সমর্থকরা উভয়ই সরকারের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে চায়। এই ফ্র্যাকশনাল দ্বন্দ্বের মূল লক্ষ্য হল কংগ্রেসের রাজ্য শাখায় নেতৃত্ব পরিবর্তনের চেষ্টা করা। শিবকুমারের এমএলএদের খার্গের সঙ্গে বৈঠক এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে, দলীয় সূত্রের খবর, এখন পর্যন্ত হাই কমান্ড নেতৃত্ব পরিবর্তনের বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি। স্রিঙ্গেরি বিধায়ক টি.ডি. রাজে গৌড়া, যখন দিল্লিতে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়, তিনি বলেন, “আমি কংগ্রেসের প্রতি বিশ্বস্ত। হাই কমান্ড আছে, হাই কমান্ড যা বলবে আমরা তা মেনে চলব, এতটুকুই।” এটি স্পষ্ট করে যে, রাজনৈতিক চাপ এবং বৈঠক চললেও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নীতিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের নির্দেশক।
এই পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছে যে, কেবিনেট রিসফ্লো বা মন্ত্রিসভা সংস্কারের মতো পরিবর্তন বিবেচনা করা হতে পারে, তবে উচ্চ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বর্তমানে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শিবকুমারের ফ্র্যাকশন খার্গের সঙ্গে বৈঠক করে হাই কমান্ডের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করছে এবং একই সঙ্গে সরকারের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা ভারসাম্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।
সিদ্দারামাইয়া সফর বাতিল করা মানে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিসরে বিশেষ প্রভাব ফেলেছে। মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থকরা বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন এলাকায় বৈঠক করেছে এবং সরকারের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা রক্ষা করার চেষ্টা করেছে। একদিকে শিবকুমারের ফ্র্যাকশন হাই কমান্ডের সঙ্গে মেলবন্ধন তৈরি করতে চায়, অন্যদিকে সিদ্দারামাইয়ার সমর্থকরা ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকার চেষ্টায় আছেন।
এই রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফলে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সংগঠন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই ধরনের ফ্র্যাকশনাল বৈঠক এবং চাপ কেন্দ্রীয় হাই কমান্ডকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। তবে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন যে, সরকারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারলে কংগ্রেসের রাজ্য শাখায় দীর্ঘমেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব কমে আসতে পারে।
একই সঙ্গে, বিজেপি এই দ্বন্দ্বকে সমালোচনা করেছে। তারা কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতাকে তুলে ধরে রাজ্যের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর প্রশ্ন তুলেছে। রাজনীতিবিদরা মনে করছেন, শিবকুমার এবং সিদ্দারামাইয়া ফ্র্যাকশন উভয়ই নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে হাই কমান্ডের কাছে চাপ প্রয়োগ করছে। এই ধরনের প্রক্রিয়া রাজ্যের রাজনীতিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছে এবং মিডিয়া ও জনমতেও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।


