মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবে সাড়া, কপিলমুনি মন্দির কর্তৃপক্ষের বড় সিদ্ধান্ত

বঙ্গের সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে গঙ্গাসাগরের মেলা (Kapil Muni) একটি ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় গুরুত্বসম্পন্ন অনুষ্ঠান। প্রতিবছর মকর সংক্রান্তিতে লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী (Kapil Muni)  এই মেলাতে অংশগ্রহণ করেন,…

Kapil Muni Ashram to Contribute Funds for Guard Rail Construction at Gangasagar

বঙ্গের সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে গঙ্গাসাগরের মেলা (Kapil Muni) একটি ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় গুরুত্বসম্পন্ন অনুষ্ঠান। প্রতিবছর মকর সংক্রান্তিতে লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী (Kapil Muni)  এই মেলাতে অংশগ্রহণ করেন, পুণ্য লাভের আশায়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই এই মেলা (Kapil Muni)এবং আশ্রমের প্রণামী অর্থের ব্যবহার নিয়ে ছিল বিতর্ক।

মেলাতে(Kapil Muni) সংগৃহীত বিপুল পরিমাণ দান এবং প্রণামীর অর্থের একটি বড় অংশ উত্তরপ্রদেশে অযোধ্যায় চলে যেত, যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছিল। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে সেই পরিস্থিতি বদলানোর এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

   

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি কপিলমুনির মন্দির (Kapil Muni) কর্তৃপক্ষকে একটি প্রস্তাব দেন, যাতে তারা গঙ্গাসাগরের সমুদ্রতীরে কংক্রিট গার্ডওয়াল তৈরি করার জন্য মেলার আয় থেকে কিছুটা অর্থ ব্যয় করেন। তিনি বলেন, “মেলা থেকে যা আয় হয়, সবটাই তো উত্তরপ্রদেশে পাঠিয়ে দেন। এতে আমার আপত্তি নেই। তবে মন্দিরের (Kapil Muni) সামনের রাস্তার সৈকত লাগোয়া অংশ কংক্রিটের করে দিলে ভালো হয়। এতে পুণ্যার্থীদের সুবিধে হয়।” এটি ছিল একটি অত্যন্ত যৌক্তিক এবং বাস্তবিক প্রস্তাব, কারণ সমুদ্রভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে এই অঞ্চলটি আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত।

মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রস্তাবের পর মন্দির কর্তৃপক্ষ একপ্রকার মুহূর্তেই সিদ্ধান্ত নেয়। কপিলমুনি মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে সঞ্জয় দাস ঘোষণা করেন, “এবার থেকে যে আয় হবে, তার ২৫ শতাংশ কংক্রিট গার্ডওয়াল তৈরির কাজে খরচ করা হবে।” এটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, কারণ এর ফলে গঙ্গাসাগর মেলার উন্নয়নে প্রাপ্ত অর্থের একটি অংশ ব্যবহার হবে। সেই সঙ্গে সমুদ্রভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

এটি পশ্চিমবঙ্গের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, কারণ এতদিন ধরে মন্দিরের আয় উত্তরপ্রদেশে চলে যাওয়ার ফলে বাংলা রাজ্যের উন্নয়নে কোন কিছুই ব্যয় হচ্ছিল না। কিন্তু এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একত্রিত হয়ে এই অর্থের একটি অংশ স্থানীয় উন্নয়ন এবং সমুদ্রভাঙন প্রতিরোধে ব্যবহার করা হবে।

তবে, একদিকে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে যেখানে কপিলমুনি মন্দির কর্তৃপক্ষ কিছুটা সামাজিক দায়বদ্ধতা গ্রহণ করেছে, সেখানে অন্যদিকে মেলার আয় নিয়েও এক নতুন আলোচনার শুরু হলো। তীর্থযাত্রীদের আয় থেকে প্রাপ্ত অর্থ কিভাবে ব্যবহৃত হবে, সেটি নিয়ে ভবিষ্যতে আরো আলোচনার প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষত, স্থানীয় মানুষের সুবিধার কথা চিন্তা করে, এই ধরনের পদক্ষেপ যেন ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

অবশেষে, মন্দির কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত শুধু গঙ্গাসাগরের মেলাকে এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রতিষ্ঠিত করবে, তা নয়, এটি আরও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে যে, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোও নিজেদের সামাজিক দায়বদ্ধতা স্বীকার করে স্থানীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।