মহারাষ্ট্রের ভোটে (Maharashtra Election 2024) এবার নয়া টুইস্ট । ভোট চলাকালীন দেবেন্দ্র ফড়নবীশের (Devendra Fadnavis) স্ত্রী অম্রুতা ফড়নবীশকে (Amruta Fadnavis) আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেতা কানহাইয়া কুমার (Kanhaiya Kumar)। কংগ্রেস রাজনৈতিক-সামাজিক বিভাজন করছে বলে সম্প্রতি সরব হয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। এবার তাঁর বিভাজনমূলক প্রচারের অভিযোগে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন কানাইয়া। তিনি বলেন, “জনসাধারণের কেন “ধর্ম রক্ষা” করতে হবে, যখন ফড়নবিসের স্ত্রী ইনস্টাগ্রাম রিল তৈরিতে ব্যস্ত।” মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে নাগপুরে একটি জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে কানহাইয়া বলেন, রাজনীতিবিদেরা অহংকারী হয়ে উঠলে তাদের “ঠিক জায়গায়” রাখা দরকার।
মুম্বই থেকে গ্রেফতার সঙ্গীতশিল্পী সঞ্জয় চক্রবর্তী, অভিযোগ নাবালিকা ছাত্রীকে শারীরিক নিগ্রহ
মহারাষ্ট্রের রাজনীতি বর্তমানে উত্তপ্ত, বিশেষ করে নাগপুর দক্ষিণ-পশ্চিম আসন নিয়ে যেখানে ফড়নবিস ও কংগ্রেসের প্রফুল্ল গুদাধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দেবেন্দ্র ফড়নবিসের স্ত্রী অমৃতা ফড়নবিস, একজন প্রশিক্ষিত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী এবং ব্যাংকার, যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত সক্রিয়। ইনস্টাগ্রামে তিনি তার বিভিন্ন সঙ্গীতের অনুষ্ঠান, সামাজিক কর্মকাণ্ড এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বিভিন্ন রিল শেয়ার করেন।
কানহাইয়া কুমার, যিনি প্রায়শই তার তীক্ষ্ণ বক্তব্যের জন্য পরিচিত, সরাসরি অম্রুতা ফড়নবিসের নাম উল্লেখ না করেও তাকে আক্রমণ করেন।
তিনি বলেন, “দেশের জনগণ যখন ধর্ম রক্ষার প্রশ্ন নিয়ে ব্যস্ত, তখন উপ-মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় রিল বানাচ্ছেন। এটা কি জনগণের প্রতি অবমাননা নয়? আমাদের রাজনীতিবিদদের জন্যও কিছু দায়িত্ব আছে।” তিনি আরও বলেন, “যদি কোনো রাজনীতিবিদ ধর্মকে ব্যবহার করে জনগণের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে চান, তবে জনগণই সেই রাজনীতিবিদকে সঠিক জায়গায় পৌঁছে দেবে।”
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে মডেল করে ট্যাব প্রকল্পে দুর্নীতি আটকানোর নির্দেশ শিক্ষা দফতরকে
নাগপুরের জনসভায় কানহাইয়ার এই বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কংগ্রেসের তরুণ নেতা কানহাইয়া কুমারের এমন আক্রমণাত্মক মন্তব্য মূলত যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। মহারাষ্ট্রের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ধর্ম এবং সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে বিতর্ক চলছে, এবং কানহাইয়া এই বিষয়টিকেই হাতিয়ার করে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন।
এদিকে, দেবেন্দ্র ফড়নবিসের সমর্থকরা কানহাইয়ার বক্তব্যকে “অপ্রয়োজনীয়” এবং “প্রচারমূলক” বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, অমৃতা ফড়নবিসের সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় থাকা বা রিল তৈরির সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।
এক বিজেপি নেতা বলেছেন, “অমৃতাজি একজন স্বনির্ভর ব্যক্তি। তিনি একজন শিল্পী এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত। ইনস্টাগ্রামে তার কার্যকলাপ নিয়ে কানহাইয়া কুমারের এত আগ্রহের কারণ কী, তা বোঝা যাচ্ছে না। “
অন্যদিকে, কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, দেবেন্দ্র ফড়নবিস এবং তার পরিবারের কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন তোলা “যৌক্তিক”। কংগ্রেসের এক মুখপাত্র বলেন, “বিজেপি নেতারা নিজেদের পরিবার নিয়ে যতটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যস্ত থাকেন, ততটা যদি জনগণের সমস্যা নিয়ে চিন্তা করতেন, তবে আজকের সমাজে এত বিভাজন থাকত না।”
ডিজেলের দাম বৃদ্ধি, ভারতীয় করনীতি ও বিশ্ববাজারের প্রভাব
এছাড়া, কানহাইয়া কুমারের বক্তব্যের পর কংগ্রেস নেতাদের মধ্যে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে।
কংগ্রেস মনে করছেন, মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে এই বিষয়টি বড় ইস্যু হিসেবে উঠে আসতে পারে। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে যে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্ম, সংস্কৃতি এবং রাজনীতি নিয়ে চেতনা বেড়েছে, যা কংগ্রেসকে বাড়তি সুবিধা দিতে পারে।
অন্যদিকে, বিজেপির দিক থেকে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলা হয়েছে যে কংগ্রেস নেতারা ব্যক্তিগত আক্রমণের মাধ্যমে জনগণের মনোযোগ সরিয়ে নিতে চাইছে।