সুপ্রিম কোর্টের ৫৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে সোমবার শপথ নিলেন বিচারপতি সূর্য কান্ত। রাষ্ট্রপতি ভবনের ঐতিহাসিক কঠোর প্রোটোকল মেনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। বিচারজগতের শীর্ষ প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে দেশের বিচারব্যবস্থা প্রবেশ করল নতুন এক অধ্যায়ে।
গভাই-এর অবসর
বিদায়ী প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই সাংবিধানিক প্রথা অনুসারে ৬৫ বছর পূর্তিতে অবসর নেন। তাঁরই সুপারিশে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সূর্য কান্তকে দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসেবে মনোনীত করেন। সিনিয়রিটির ভিত্তিতেই দায়িত্বভার আসে তাঁর কাঁধে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দ্রুতগামী বিচারপ্রক্রিয়া, ডিজিটাল অবকাঠামো ও বিচারব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, এই তিন অগ্রাধিকারের কেন্দ্রেই তাঁর নেতৃত্বকে ঘিরে প্রত্যাশা।
বিচারপতি কান্ত ২০২৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁর অবসরের পর শীর্ষ পদে আসীন হওয়ার কথা বিচারপতি বিক্রম নাথের।
মধ্যবিত্ত হরিয়ানার সন্তান থেকে দেশের শীর্ষ বিচারপতির চূড়ায়— এক উল্লেখযোগ্য যাত্রা Justice Surya Kant takes oath
১৯৬২ সালে হরিয়ানার এক সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মানো সূর্য কান্তের উত্থান ভারতীয় বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে নিজেই একটি অধ্যয়নযোগ্য গল্প। আইনজীবী হিসেবে যাত্রা শুরু ১৯৮৪ সালে। দ্রুতই তাঁর তীক্ষ্ণ আইনি বোঝাপড়া এবং বলিষ্ঠ আদালত–সদন উপস্থিতি তাকে সামনে নিয়ে আসে।
মাইলফলকগুলো:
২০০০ — হরিয়ানার কনিষ্ঠতম অ্যাডভোকেট জেনারেল
২০০4 — পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের স্থায়ী বিচারপতি
২০১৮–২০১৯ — হিমাচল প্রদেশ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি
২০১৯ — সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে যোগ
২০২৪ — সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস কমিটির চেয়ারম্যান
বিচারপতি কান্ত কর্মজীবনের শুরু থেকেই পরিচিত ছিলেন, সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে তাঁর কঠোর অবস্থান, প্রান্তিক মানুষের ন্যায়ের অধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়া, এবং বিচারব্যবস্থাকে নাগরিক–বান্ধব করার জোরালো অবস্থান— এই তিন ভিত্তির জন্য।
শপথের পর বার্তা— ন্যায় শুধু প্রতিষ্ঠা নয়, দৃশ্যমানও হতে হবে
শপথ অনুষ্ঠানের পর নিজের বক্তব্যে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ভারতের বিচারব্যবস্থার ভবিষ্যৎ সংস্কারে মূল ভূমিকা নেবে স্বচ্ছতা, দক্ষতা, এবং নাগরিকপ্রাপ্তি বৃদ্ধি।
আইনজীবী মহলের বিশেষজ্ঞদের মত- বিচারপতি সূর্য কান্তের নেতৃত্বে বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুততর, ডিজিটাল আদালত ব্যবস্থা সম্প্রসারিত এবং আইনি সহায়তা আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
