ভারতের ২৭২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি, যার মধ্যে বিচারপতি, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন, খোলা চিঠির মাধ্যমে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। এই চিঠিতে বলা হয়েছে, রাহুল গান্ধীর পুনরায় ‘ভোট চুরি’ অভিযোগের কারণে ভারতীয় গণতন্ত্রের মূল প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিষোদগারী এবং প্ররোচনামূলক বক্তব্যের ধারা বাড়ছে।
চিঠি রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কিছু রাজনৈতিক নেতা জনগণের কাছে বাস্তবসম্মত নীতি বিকল্প না দিয়ে উস্কানিমূলক ও প্রমাণহীন অভিযোগে আশ্রয় নিচ্ছেন। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, এই ধরনের বক্তব্য দেশের সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আস্থা ক্ষুণ্ণ করতে পারে এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, “প্রথমে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সাফল্য ও সাহসিকতা প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে, পরে বিচারব্যবস্থার ন্যায্যতা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করা হয়েছে, সংসদ এবং সংবিধানিক দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরোধিতা করা হয়েছে। এখন নির্বাচনী কমিশনের পালা, যার সততা এবং খ্যাতি নিয়ে পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক হামলা করা হচ্ছে।” বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চিঠি শুধুমাত্র রাজনৈতিক সমালোচনার অংশ নয়, বরং এটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংরক্ষণ এবং জনমতকে সচেতন করার এক প্রয়াস। চিঠিতে রাহুল গান্ধীর মন্তব্যকে ‘দায়িত্বহীন’ এবং ‘অপ্রমাণিত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি এই ধরনের অভিযোগ জনগণের আস্থা নষ্ট করতে পারে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
চিঠির স্বাক্ষরকারীরা দেশের সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনী কমিশন এবং সশস্ত্র বাহিনীকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই ধরনের অভিযোগ যদি চলতে থাকে, তাহলে দেশের মূল কাঠামোর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে নির্বাচনী কমিশন একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা গণতন্ত্রের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।
এছাড়াও, চিঠিতে বলা হয়েছে যে, রাজনৈতিক বিরোধিতা এবং সমালোচনা স্বাভাবিক ও গ্রহণযোগ্য হলেও, তা যেন প্রমাণভিত্তিক এবং সংবিধানসম্মত হোক। উস্কানিমূলক, ভিত্তিহীন এবং প্রতিহিংসাপূর্ণ মন্তব্য সমাজে বিভাজন এবং অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। দেশপ্রেম, সংবিধান ও গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধার সঙ্গে এই ধরনের বক্তব্য এড়ানো জরুরি।
সংক্ষেপে, ২৭২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির খোলা চিঠি রাহুল গান্ধীর ‘ভোট চুরি’ অভিযোগকে কঠোরভাবে সমালোচনা করেছে। তারা বলেছেন যে, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়া স্বাভাবিক হলেও দেশের সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মান রক্ষা করা অপরিহার্য। সশস্ত্র বাহিনী, বিচারব্যবস্থা, সংসদ এবং নির্বাচনী কমিশন—এই চারটি প্রতিষ্ঠান দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর মূল স্তম্ভ। এই চিঠি একটি সতর্কবার্তা হিসেবে ধরা হচ্ছে, যা রাজনৈতিক নেতাদের প্ররোচনামূলক মন্তব্য এড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে এবং দেশের গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখার প্রয়াসকে জোর দিচ্ছে।
