কলকাতা দখল হুমকি, বিজেপি নেতার জবাবে আলোচনা তুঙ্গে

বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাকর্তাদের “কলকাতা দখল” (Kolkata Capture Threat) করার মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাত (Jyotirmay…

Jyotirmay Singh Mahato

বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাকর্তাদের “কলকাতা দখল” (Kolkata Capture Threat) করার মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাত (Jyotirmay Singh Mahato) রীতিমতো তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করে বলেছেন, “আরশোলা পাখি হওয়ার তত্ত্ব এই প্রথম শুনলাম। করে দেখুক না।”

বিজেপি নেতার তীব্র আক্রমণ
জ্যোতির্ময় সিং মাহাত বলেছেন, “বাংলাদেশ ভারতের হাত ধরে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। আজ তারাই বড় বড় কথা বলছে। এটি কেবল হাস্যকর নয়, একেবারে ধৃষ্টতাপূর্ণ।” তিনি আরও যোগ করেছেন, “আমি একজন হিন্দু এবং হিন্দু সাংসদ হিসেবে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের পাশে আছি। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।”

   

তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রশ্ন
তৃণমূল কংগ্রেসের নীরবতা নিয়েও আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেস এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য না করে রাজ্যের মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুক। মুখে মানবতাবাদী সুর আর বাস্তবে নীরবতা, এই দ্বিচারিতা আর চলবে না।”

বাকবিতণ্ডার সূচনা
সম্প্রতি, বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তাদের দাবি করা হয়েছে, তারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর চেয়ে ভালোভাবে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত এবং “কলকাতা, আসাম ও দিল্লি দখল” করা তাদের জন্য কোনও বড় চ্যালেঞ্জ নয়। এরকম বিতর্কিত বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তা সোশ্যাল মিডিয়া এবং রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন ফেলেছে।

কঠোর অবস্থানের দাবি
বিজেপি নেতারা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তাঁরা মনে করছেন, এই ধরনের বক্তব্য শুধু ভারতের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি নয়, বরং দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটানোর জন্য একটি ষড়যন্ত্র।

সংখ্যালঘুদের প্রসঙ্গ টেনে আনা
জ্যোতির্ময় সিং মাহাত বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর যে অত্যাচার হচ্ছে, তা আমরা নীরবে মেনে নেব না। আমাদের সরকার সবরকম পদক্ষেপ করবে।” তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশ সরকারের এই ধরনের বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য নিজেদের দেশের সমস্যাগুলি আড়াল করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।

তৃণমূলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
তিনি আরও বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের মৌলবাদীদের সঙ্গে রাজনৈতিক বোঝাপড়া করছে। এই ধরনের বিষয়ে তাদের মৌনতা শুধু তাদের ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতিকে সুরক্ষিত রাখার জন্য। অথচ এমন পরিস্থিতিতে মুখ খুলে মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া
সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ মানুষ এই বিষয়ে দুই ভাগে বিভক্ত। কেউ কেউ বিজেপি নেতার কটাক্ষকে সমর্থন জানিয়েছেন, আবার কেউ কেউ এই বক্তব্যকে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া বলেও উল্লেখ করেছেন।

বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাকর্তাদের এই বক্তব্য কেবল আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য একটি উদ্বেগজনক বিষয় নয়, বরং ভারতীয় রাজনীতিতেও নতুন এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যের নেতৃত্ব এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেয়।