বিজেপি শাসিত রাজ্যে সাংবাদিক খুন

বিজেপি শাসিত রাজ্যে সাংবাদিক খুন ছত্তীসগড়ের বিজাপুরে এক সাংবাদিকের নির্মম হত্যার (Journalist Killed) ঘটনায় রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নিহত সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকারের (Mukhesh Chandrakar) নিখোঁজ…

Journalist died in BJP ruled state of Chattishgarh

বিজেপি শাসিত রাজ্যে সাংবাদিক খুন

ছত্তীসগড়ের বিজাপুরে এক সাংবাদিকের নির্মম হত্যার (Journalist Killed) ঘটনায় রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নিহত সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকারের (Mukhesh Chandrakar) নিখোঁজ হওয়ার পরে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় ঘটনাটি আরও গভীর রহস্যময় হয়ে উঠেছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

   

বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ডোভালের সঙ্গে বৈঠকে দিল্লিতে মার্কিন এনএসএ সুলিভান

ঘটনার বিবরণ

ছত্তীসগড়ের বিজাপুর জেলার পুলিশ জানিয়েছে, সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকার ১ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে এবং তদন্তের জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করে।

আজ, পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে যে মুকেশ চন্দ্রকারের মৃতদেহ বিজাপুরের কন্ট্রাক্টর সুরেশ চন্দ্রকারের বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভিতরে পাওয়া গেছে। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিভিন্ন প্রমাণ এবং তথ্যের ভিত্তিতে হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশের বক্তব্য

বাস্তার অঞ্চলের আইজি পি সুন্দররাজ জানিয়েছেন, “আমরা ১ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ সাংবাদিক মুকেশ চন্দ্রকারের বিষয়ে তদন্ত শুরু করি। আজ তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা বর্তমানে ঘটনার কারণ এবং এর পেছনে থাকা অপরাধীদের শনাক্ত করার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছি। মৃতদেহের পোস্টমর্টেম রিপোর্টের ভিত্তিতে আরও তথ্য সামনে আসবে।”

মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশ্ন

প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে মুকেশ চন্দ্রকার কোনো প্রভাবশালী কন্ট্রাক্টরের দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, সেই কারণেই তাঁকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। সুরেশ চন্দ্রকারের বাড়ি থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় তাঁর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। 

তামিলনাডুতে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, মৃত ৬

সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ

সাংবাদিক সমাজ এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তাঁদের দাবি, এটি শুধুমাত্র একটি হত্যাকাণ্ড নয়, বরং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর আঘাত। সাংবাদিকদের অভিযোগ, বিজেপি (BJP) শাসিত ছত্তীসগড়ে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।

বিজাপুর প্রেস ক্লাবের এক সদস্য বলেন, “মুকেশ আমাদের একজন সাহসী সহকর্মী ছিলেন। তিনি সত্য প্রকাশে কখনো পিছপা হননি। তাঁর এমন নির্মম মৃত্যু আমাদের শোকাহত করেছে এবং আমরা এর সঠিক তদন্ত ও দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।”

বিজেপি সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

এই ঘটনায় বিজেপি সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করেছে যে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে রয়েছে।

কংগ্রেসের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, “সাংবাদিকদের উপর এমন হামলা গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। মুকেশ চন্দ্রকারকে হত্যার পেছনে আসল দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া উচিত। বিজেপি সরকারের এই ব্যর্থতা গ্রহণযোগ্য নয়।” 

দিল্লি নির্বাচনে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে লড়বেন বিজেপির পরবেশ বর্মা

সরকারি প্রতিক্রিয়া

রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন যে তদন্তের কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। তবে বিরোধীরা সরকারের এই প্রতিশ্রুতিকে যথেষ্ট মনে করছে না।

সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ পরিস্থিতি

এই হত্যাকাণ্ড আরও একবার সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সাংবাদিক মহলের মতে, শুধু ছত্তীসগড় নয়, সারা দেশেই সাংবাদিকদের ওপর চাপ এবং হামলার ঘটনা বাড়ছে। মুকেশ চন্দ্রকারের মৃত্যু শুধু একজন সাংবাদিকের মৃত্যু নয়, বরং গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় আঘাত।

মুকেশ চন্দ্রকারের মৃত্যুর পেছনে থাকা কারণ এবং অপরাধীদের সঠিক চিহ্নিতকরণ কেবল তাঁর পরিবারের জন্য নয়, সাংবাদিক সমাজের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণতন্ত্র রক্ষায় সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।