HomeBharatগেরুয়া রাজ্যে চাকরির টোপ দিয়ে অপরাধ! পুলিশের জালে আহমেদ-ইমরান

গেরুয়া রাজ্যে চাকরির টোপ দিয়ে অপরাধ! পুলিশের জালে আহমেদ-ইমরান

- Advertisement -

ভোপাল: মধ্যপ্রদেশের জোবাদে দুই আদিবাসী কিশোরীকে চাকরির টোপ দেখিয়ে (Jobat tribal girls forced conversion case) প্রলোভনে ফেলার অভিযোগে এক গুরুতর অপরাধচক্রের পর্দাফাঁস হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত তিনজন আহমেদ শেখ, ইমরান ইয়াকুব এবং আমজাদ খাত্তি গত দুই বছর ধরে এলাকায় একটি সংগঠিত চক্র চালাচ্ছিল, যেখানে কিশোরীদের ভয় দেখিয়ে ধর্মান্তকরণ, জোরপূর্বক নিকাহে বাধ্য করা এবং যৌন শোষণের মতো নানান অপরাধের চেষ্টা করা হতো।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন দুই আদিবাসী কিশোরী চাকরির সন্ধানে বেরিয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। অভিযোগ, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাদের জোবাদ এলাকার একটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই শুরু হয় নির্যাতন। পুলিশে দায়ের হওয়া এফআইআর অনুযায়ী, কিশোরীদের মারধর করা হয়, জোর করে ধর্মান্তরণের চাপ দেওয়া হয় এবং তাদের মধ্যে এক কিশোরীকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়।

   

সদ্য ভারতে ফেরত আসা সোনালীর জামিন নিয়ে বিস্ফোরক তরুণজ্যোতি

ঘটনার পর কিশোরীরা গ্রামের লোকজনের সহায়তায় থানায় অভিযোগ জানায়। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অসহায়, দরিদ্র এবং আদিবাসী পরিবারকে লক্ষ্য করে চক্র চালাচ্ছিল। চাকরির লোভ দেখানো থেকে শুরু করে ভয়ভীতি প্রদর্শন—সব কৌশলই ব্যবহার করা হতো। স্থানীয়দের দাবি, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে কঠোর পুলিশি পদক্ষেপ এবং প্রশাসনের নজরদারি জরুরি।

জোবাদ থানার পুলিশ দ্রুত তদন্ত শুরু করে এবং তিনজন অভিযুক্তের মধ্যে দু’জন আহমেদ শেখ ও ইমরান ইয়াকুব কে গ্রেফতার করে। তৃতীয় ব্যক্তি আমজাদ খাত্তি এখনো পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি শুধুমাত্র যৌন নির্যাতনের নয়, বরং সংগঠিত অপরাধের আকারে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। সেই কারণেই গুরুতর ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে POCSO Act, SC/ST Atrocities Act, এবং মধ্যপ্রদেশ Religious Freedom Act–এর আওতায় একাধিক ধারায় মামলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ভুক্তভোগী কিশোরীদের মেডিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা দাবি তুলেছে, অপরাধীদের সম্পত্তির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কঠোর ব্যবস্থা যেমন বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে বুলডোজার ব্যবহার নেওয়া উচিত। তাদের বক্তব্য, এই ঘটনার পিছনে যে চক্র আছে, তাদের দমন করতে ‘উদাহরণ’ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।

সমাজকর্মী এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলিও এই ঘটনার পর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, পার্বত্য ও আদিবাসী এলাকায় সুযোগের অভাব এবং দারিদ্র্যকে কাজে লাগিয়ে এ ধরনের চক্র সহজেই সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে সরকারের উচিত নিরাপত্তা, শিক্ষা এবং চাকরির সুযোগ বাড়ানো, যাতে এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে ওঠে।

পুলিশ জানিয়েছে, দুই বছরের চক্রের বিষয়ে যে তথ্য এসেছে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তদন্তে আরও বহু তথ্য সামনে আসতে পারে। জোবাদ থানার তদন্তকারী অফিসার বলেন, “এই মামলা শুধু একটি নির্দিষ্ট ঘটনার নয়, বরং একটি গভীর শিকড়-গজানো অপরাধ নেটওয়ার্কের জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা প্রতিটি সূত্র খতিয়ে দেখছি।”

অন্যদিকে, ভুক্তভোগী পরিবারগুলির দাবি, পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় তারা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। তবে তারা চায়, ঘটনার কঠোর শাস্তি হোক এবং কোনোভাবেই চক্রটি যেন আবার সক্রিয় হতে না পারে। সামগ্রিকভাবে, জোবাদে দুই কিশোরীর উপর হামলার এই ঘটনা শুধু একটি অপরাধ নয়; এটি সমাজের দুর্বল অংশের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের শোষণ ও প্রতারণার উদাহরণ, যা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে আরও সতর্ক হওয়ার বার্তা দিচ্ছে।

- Advertisement -
online desk
online desk
Get Bengali news updates, Bengali News Headlines , Latest Bangla Khabar, Bengali News from Kolkata
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular