এবার তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমঝোতা স্মারক বাতিল যে এন ইউ এর

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (jnu) জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তুরস্কের ইনোনু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্থগিত করেছে। এই পদক্ষেপ ভারত-পাকিস্তান সংঘাত এবং তুরস্কের পাকিস্তানের…

jnu bans turkey unuversity

জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (jnu) জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তুরস্কের ইনোনু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্থগিত করেছে। এই পদক্ষেপ ভারত-পাকিস্তান সংঘাত এবং তুরস্কের পাকিস্তানের প্রতি সমর্থনের পটভূমিতে গ্রহণ করা হয়েছে, যা ভারতে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

জেএনইউ-এর (jnu) অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে, জেএনইউ এবং তুরস্কের ইনোনু বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এমওইউ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। জেএনইউ জাতির পাশে রয়েছে।”

   

জেএনইউ-এর ওয়েবসাইট অনুযায়ী (jnu)

জেএনইউ-এর (jnu) ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এই চুক্তিটি ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-এ তিন বছরের জন্য স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং এটি ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৮ পর্যন্ত কার্যকর থাকার কথা ছিল। এই এমওইউ-এর আওতায় শিক্ষক ও ছাত্র বিনিময় কর্মসূচি, গবেষণা সহযোগিতা এবং যৌথ প্রকাশনার পরিকল্পনা ছিল(jnu)। তবে, তুরস্কের পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন এবং ভারতের বিরুদ্ধে তার অবস্থানের কারণে জেএনইউ এই চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই ঘটনার দিনই ভারত সরকার সাময়িকভাবে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের টুইটার অ্যাকাউন্ট ব্লক করে, কারণ এটি ভারতের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা এবং মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছিল। এই পদক্ষেপ তুরস্কের পণ্য ও পরিষেবার বিরুদ্ধে ভারতে ক্রমবর্ধমান বয়কটের মনোভাবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

পাকিস্তানের পক্ষে তার সরাসরি সমর্থন

তুরস্কের প্রতি ভারতের ক্ষোভের মূল কারণ হল পাকিস্তানের পক্ষে তার সরাসরি সমর্থন, বিশেষ করে অপারেশন সিঁদুরের সময়। ২২ এপ্রিল, ২০২৫-এ জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হন। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত ৭ মে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে নয়টি জঙ্গি শিবিরের উপর আঘাত হানে, যা ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে পরিচিত।

এই অভিযানের সময় পাকিস্তান তুরস্কের তৈরি সোঙ্গার ড্রোন ব্যবহার করে ভারতের সামরিক ও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার চেষ্টা করে, যা ব্যর্থ হয়। তুরস্কের এই ড্রোন সরবরাহ ভারতের ক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে দেয়।

তুরস্কের রাষ্ট্রপতি (jnu) রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান পাকিস্তানের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ভারতের আঘাতকে “অযৌক্তিক আগ্রাসন” হিসেবে অভিহিত করেন এবং পহেলগাঁও হামলার আন্তর্জাতিক তদন্তের জন্য পাকিস্তানের প্রস্তাবকে সমর্থন করেন। এই অবস্থান ভারতের কাছে অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়।

ভারত এবং পাকিস্তান ১০ মে একটি মার্কিন-মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, যা চার দিনের তীব্র ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর কার্যকর হয়। তবে, তুরস্ক ও আজারবাইজানের পাকিস্তানপন্থী অবস্থান ভারতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভারতীয়রা তুরস্ক ও আজারবাইজানে ভ্রমণ বয়কটের আহ্বান জানিয়েছে, এবং এই দুই দেশের পণ্য, যেমন তুরস্কের আপেল ও মার্বেল, বর্জনের ডাক দেওয়া হয়েছে।

Advertisements

বিহার জয়ের লক্ষ্যে বঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা

শীর্ষস্থানীয় ভ্রমণ প্ল্যাটফর্ম মেকমাইট্রিপ এবং ইজমাইট্রিপ

ভারতের শীর্ষস্থানীয় ভ্রমণ প্ল্যাটফর্ম মেকমাইট্রিপ এবং ইজমাইট্রিপ এই দুই দেশে ভ্রমণের জন্য বুকিংয়ে উল্লেখযোগ্য হ্রাস এবং বাতিলের কথা জানিয়েছে। মেকমাইট্রিপ জানায়, গত এক সপ্তাহে তুরস্ক ও আজারবাইজানে বুকিং ৬০ শতাংশ কমেছে, এবং বাতিলের হার ২৫০ শতাংশ বেড়েছে।

তারা বলেছে, “আমরা আমাদের জাতির পাশে দাঁড়িয়েছি এবং আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি গভীর সম্মান জানিয়ে এই মনোভাবকে সমর্থন করি। আমরা তুরস্ক ও আজারবাইজানে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণের বিরুদ্ধে পরামর্শ দিচ্ছি।” মেকমাইট্রিপ এই গন্তব্যগুলির জন্য সমস্ত প্রচার ও অফার বন্ধ করে দিয়েছে।

ইজমাইট্রিপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত পিট্টি জানান

ইজমাইট্রিপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত পিট্টি জানান, তুরস্কে ২২ শতাংশ এবং আজারবাইজানে ৩০ শতাংশের বেশি বুকিং বাতিল হয়েছে। তিনি অনুমান করেন, গত বছর এই দুই দেশে ৩.৮ লক্ষ ভারতীয় ভ্রমণ করেছিলেন, যা প্রায় ২,৫০০ থেকে ৩,০০০ কোটি টাকার রাজস্ব তৈরি করেছিল। এই বয়কটের ফলে তুরস্ক ও আজারবাইজানের পর্যটন শিল্পে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হবে।

ভারতের (jnu) বাণিজ্য সম্পর্কও তুরস্কের সঙ্গে চাপের মুখে পড়তে পারে। তুরস্কের পাকিস্তানকে সামরিক সহায়তা, বিশেষ করে ড্রোন সরবরাহ, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জেএনইউ-এর এই পদক্ষেপ ভারতের কঠোর অবস্থান এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে।

এই ঘটনা ভারতের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক কৌশলের একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। তুরস্ক ও আজারবাইজানের প্রতি ভারতীয়দের ক্ষোভ এবং বয়কটের আহ্বান জাতীয় ঐক্য ও সংহতির প্রতীক হিসেবে উঠে এসেছে।