মারণ ফাঁদ! নকশালদের পোতা আইইডি বিস্ফোরণে প্রাণ গেল ৯ বছরের কন্যার

Jharkhand Naxal IED Child Death

রাঁচি: ঝাড়খণ্ডের পশ্চিম সিংভূমের ঘন সারান্ডা অরণ্যে মারণ ফাঁদ৷ মাটিতে পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে প্রাণ হারাল ৯ বছরের এক আদিবাসী কন্যা৷ নাম সিরিয়া হেরেঞ্জ। এই ঘটনায় শোকে আর ক্ষোভে ফেটে পড়েছে গোটা এলাকা।

Advertisements

জ্বালানি কাঠ ও বনলতা সংগ্রহে গিয়ে বিপদ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে জ্বালানি কাঠ ও বনলতা সংগ্রহে গিয়েছিল সিরিয়া। সকাল প্রায় সাতটা হবে৷ আচমকা প্রবল বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা অরণ্য৷ মুহূর্তের মধ্যে ধোঁয়া আর ছাইয়ে ঢেকে যায় চারপাশ। আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু হয়ে যায় গ্রামবাসীদের মধ্যে৷ কিছুক্ষণ পর যখন ধোঁয়া কাটে, তখন দেখা যায়, সিরিয়া নিখোঁজ। জঙ্গলে খোঁজ চালিয়ে উদ্ধার হয় তার নিথর দেহ৷ বিস্ফোরণস্থলের কাছেই ছিটকে পড়ে ছিল সে।

   

সিরিয়ার দেহ চক্রধরপুরে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। চোখে জল নিয়ে এক গ্রামবাসী বলেন, “ও তো শুধু কাঠ কুড়োতে গিয়েছিল, কী দোষ করেছিল?”

টহলদারি দলকে নিশানা করতেই আইইডি পোঁতা হয় Jharkhand Naxal IED Child Death

নিরাপত্তা বাহিনীর প্রাথমিক অনুমান, টহলদারি দলকে নিশানা করতেই নকশালরা এলাকায় একাধিক আইইডি পুঁতে রেখেছিল। ঘটনাস্থল সিআরপিএফ ক্যাম্প থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে। ফলে সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না যে, আরও বিস্ফোরক পুঁতে রাখা থাকতে পারে অরণ্যের অন্য অংশেও।

Advertisements

এই বিস্ফোরণের পর আতঙ্কে পুড়ছে স্থানীয় জনজীবন। গ্রামের মানুষ এখন জঙ্গলে যেতে ভয় পাচ্ছেন। অথচ সেই অরণ্যই তাঁদের একমাত্র জীবিকার উৎস—সেখানে থেকেই আসে জ্বালানি কাঠ, ফল ও পাতা। “এখন বনে যাওয়া মানেই মৃত্যুর মুখে ফেরা,” বলছেন এক প্রবীণ গ্রামবাসী।

দেশকে সম্পূর্ণ নকশালমুক্ত করার লক্ষ্য

কেন্দ্রের লক্ষ্য, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে দেশকে সম্পূর্ণ নকশালমুক্ত করা। সেই প্রচেষ্টা জোরদার হলেও, এই মর্মান্তিক ঘটনা নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে নতুন করে সতর্কবার্তা ছুড়ে দিল। ইতিমধ্যে গোটা এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে, বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়কারী দল ঘিরে ফেলেছে জঙ্গলের একাধিক এলাকা।

সারান্ডার সবুজ অরণ্যে আজ তাই শুধু সন্ত্রাস নয়, ভেসে বেড়াচ্ছে এক নিরপরাধ শিশুর অসমাপ্ত শৈশবের কান্না।