ঝাড়খণ্ডের কুড়মি সম্প্রদায়ের আন্দোলনকারীরা (Kurmi Protest), যারা সম্প্রতি নিজেদের সম্প্রদায়কে আদিবাসী (Scheduled Tribe) স্বীকৃতি দেওয়া এবং কুর্মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম সূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে রেল অবরোধ শুরু করেছিলেন, রবিবার কেন্দ্রের আশ্বাস পাওয়ার পর প্রায় সব স্টেশন থেকে আন্দোলন তুলে নিলেন। তবে ধনবাদ জেলার প্রাধানখাতা এবং সেরা-খারসওয়ান জেলার সিনি স্টেশন থেকে আন্দোলন এখনও চলমান।
কুড়মি বিকাশ মোর্চার কেন্দ্রীয় সভাপতি শীতল ওহদার বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অফিস থেকে বৈঠকের আশ্বাস পাওয়ার পর আমরা প্রায় সব স্টেশন থেকে আন্দোলন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে বৈঠকের সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনও ঘোষণা হয়নি। সেক্ষেত্রে আমরা দুটি স্টেশন ছাড়া সব স্টেশন থেকে অবরোধ তুলে নিচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “সিনি স্টেশন থেকে আন্দোলন শীঘ্রই তুলে নেওয়া হবে। প্রাধানখাতা স্টেশনে অবরোধ চলবে যতক্ষণ কেন্দ্র বৈঠকের তারিখ নির্ধারণ করবে।”
শনিবার হাজার হাজার কুড়মি আন্দোলনকারী মুরি, রাই, টাটিসিলাই (রাঁচি জেলা), বারকাকানা (রামগড়), পরসনাথ (গিরিদি), চরহি (হজারিবাগ), প্রাধানখাতা (ধনবাদ), গালুঢিহ (পূর্ব সিঙ্ঘভুম), চন্দ্রপুরা (বোকারা) স্টেশনে ট্র্যাক দখল করেন। তারা ST স্বীকৃতি ও কুর্মালি ভাষার অন্তর্ভুক্তি দাবিতে এই পদক্ষেপ নেন।
অবিরাম আন্দোলনের কারণে সাউথ ইস্টার্ন রেলওয়ের রাঁচি বিভাগের ও ইস্ট সেন্ট্রাল রেলওয়ের ধনবাদ বিভাগের ১০০টিরও বেশি যাত্রী ট্রেন বাতিল, পুনঃনির্দেশিত বা সংক্ষিপ্ত শেষ করা হয়। আন্দোলনের ফলে আরও অনেক ট্রেনও বাতিল হয়েছে।
কেন্দ্রের আশ্বাস পাওয়ার পর কুড়মি আন্দোলনকারীরা জানান, বৈঠকের তারিখ নির্ধারিত হলে প্রাধানখাতা স্টেশনের অবরোধও উঠে যাবে। আন্দোলনকারী সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব মনে করছে, এটি একটি শান্তিপূর্ণ ও সংলাপমুখী সমাধানের সুযোগ।
অবরোধ তুলে নেওয়ার ফলে রেল পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কুড়মি সম্প্রদায়ের দাবিগুলো কেন্দ্র পর্যায়ে আলোচনা করার জন্য অমিত শাহের সঙ্গে শীঘ্রই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই আন্দোলন ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জেলায় দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল। সম্প্রতি রেল অবরোধ আকার ধারণ করলে সাধারণ যাত্রীদের দৈনন্দিন জীবন ও রেল চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। কেন্দ্রের আশ্বাস পাওয়ার পর পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
কুড়মি সম্প্রদায়ের আন্দোলন প্রমাণ করছে যে, আদিবাসী স্বীকৃতি ও ভাষা সংক্রান্ত দাবিতে সংলাপমুখী ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ তৈরি করা সম্ভব। এটি ঝাড়খণ্ডের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
