ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) হাজারিবাগ জেলায় সোমবার ভোরে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে তীব্র গুলিবিনিময়ে খতম হলেন দেশের অন্যতম কুখ্যাত মাওবাদী নেতা সহ তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী। পুলিশের সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত ওই শীর্ষ মাওবাদী কমান্ডারের নাম সাহদেও সোরেন। তাঁর মাথার দাম ছিল ১ কোটি টাকা। তিনি সিপিআই (মাওবাদী)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং পূর্ব ভারতের অন্যতম ‘ওয়ান্টেড’ নেতা ছিলেন।
ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, রবিবার গভীর রাতে গোপন সূত্রে খবর আসে যে সাহদেও সোরেন ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা হাজারিবাগ জেলার তাতিজরিয়া থানার অন্তর্গত করান্ডি গ্রামে অবস্থান করছে। খবরের সত্যতা যাচাইয়ের পর সোমবার ভোররাত থেকেই অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করে পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী।
অভিযানে অংশ নেয় সিআরপিএফ-এর বিশেষ ‘কোবরা’ ব্যাটালিয়ন, গিরিডি জেলা পুলিশ ও হাজারিবাগ জেলা পুলিশ। যৌথ বাহিনী ভোর ৫টা নাগাদ গ্রামটিকে ঘিরে ফেলে। সকাল ৬টা নাগাদ প্রথম গুলির লড়াই শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময় চলে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, গুলির লড়াই শেষে ঘটনাস্থল থেকে তিন মাওবাদীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একজন হলেন সাহদেও সোরেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই মাওবাদী আন্দোলনের শীর্ষ সারির নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পূর্ব ভারতের একাধিক নাশকতামূলক ঘটনায় তাঁর নাম জড়িয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, বিস্ফোরণ, চাঁদাবাজি, রেল ও সড়কপথে নাশকতা— এইসব গুরুতর অভিযোগ ছিল।
মাওবাদী দমন অভিযানে এই মৃত্যুকে বড় সাফল্য বলে মনে করছে ঝাড়খণ্ড পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, সাহদেও সোরেনের নেতৃত্বে এই অঞ্চলে মাওবাদী নেটওয়ার্ক দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় ছিল। তাঁর মৃত্যুর ফলে সংগঠনটি বড় ধাক্কা খাবে।
অভিযান শেষে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রচুর অস্ত্র, গুলি, বোমা তৈরির সামগ্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র উদ্ধার করেছে। পুলিশের দাবি, এই নথিপত্র থেকে মাওবাদীদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে। পাশাপাশি একাধিক সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। হাজারিবাগের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, “গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। সাহদেও সোরেন বহু বছর ধরে মাওবাদী নাশকতার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর মৃত্যুতে পূর্ব ভারতের মাওবাদী নেটওয়ার্কে বড় ধাক্কা লাগবে।” পুলিশ সূত্রের খবর, নিহত অন্য দুই মাওবাদীও সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন।